সর্বশেষ

১০ ডিসেম্বর বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ৩৯তম শাহাদাৎ বার্ষিকী


আবু নাছের মঞ্জু, নোয়াখালী: 
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ৩৯তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ১০ ডিসেম্বর । একাত্তরের এইদিনে যুদ্ধজাহাজ পলাশে তিনি শহাদাৎবরণ করেন। আলোচনা,মিলাদ, শহীদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন এবং শিশু কিশোরদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতাসহ নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার শহীদ রুহুল আমিন নগরে বীরশ্রেষ্ঠ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর দিবসটি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদ এদিন বিকেলে বিজয় মঞ্চে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
সংক্ষিপ্ত জীবনী:
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মো: রুহুল আমিন ১৯৩৫ সালে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার শহীদ রুহুল আমিন নগরে (বাঘপাচড়া গ্রামে) জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতার নাম আজহার পাটোয়ারী, মাতা জুলেখা খাতুন। রুহুল আমিন বাঘপাচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে আমিষাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তিনি ১৯৫৩ সালে জুনিয়র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নৌ-বাহিনীতে যোগদান করে আরব সাগরে অবস্থিত নানোরা দ্বীপে পিএনএস বাহাদুর-এ প্রাথমিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি পিএনএস কারসাজে যোগদান করেন। ১৯৫৮ সালে তিনি পেশাগত প্রশিক্ষণ শেষ করেন এবং ১৯৬৫ সালে মেকানিশিয়ান কোর্সের জন্য নির্বাচিত হন। পিএনএস কারসাজে কোর্স সমাপ্ত করার পর রুহুল আমিন আর্টিফিসার পদে নিযুক্ত হন। ১৯৬৮ সালে চট্রগ্রাম পিএনএস বখতিয়ার নৌ-ঘাটিতে বদলি হয়ে যান। ১৯৭১ এর এপ্রিলে ঘাটি থেকে পালিয়ে যান। রুহুল আমিন ভারতের ত্রিপুরা সীমান্ত অতিক্রম করে ২ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২ নম্বর সেক্টরের অধীনে থেকে বিভিন্ন স্থলযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী গঠিত হলে তিনি কলকাতায় চলে আসেন। ভারত সরকার বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে দু’টি গানবোট উপহার দেয়। গানবোটের নামকরণ করা হয় পদ্মা  ও পলাশ। রুহুল আমিন পলাশের প্রধান ইঞ্জিন রুমে আর্টিফিসার হিসাবে দায়িত্ব গ্রহন করেন।

যেভাবে শহীদ হলেন: ৬ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী যশোর সেনানিবাস দখলের পর পদ্মা, পলাশ এবং ভারতীয় মিত্রবাহিনীর একটি গানবোট ‘পানভেল’ খুলনার মংলা বন্দরে পাকিস্তানি নৌ-ঘাটি পিএনএস তিতুমীর দখলের উদ্দ্যেশে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ১০ ডিসেম্বর দুপুর ১২টার দিকে গানবোটগুলো খুলনা শিপইয়ার্ডের কাছে এলে অনেক উঁচুতে তিনটি জঙ্গি বিমান উড়তে দেখা যায়। শত্র“র বিমান অনুধাবন করে পদ্মা ও পলাশ থেকে গুলি করার অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু অভিযানের সর্বাধিনায়ক ক্যাপ্টেন মনেন্দ্র নাথ ভারতীয় বিমান মনে করে গুলিবর্ষন থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন। এর কিছুক্ষণ পর বিমানগুলো থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে নিচে নেমে আসে এবং আচমকা গুলিবর্ষণ শুরু করে। গোলা সরাসরি ‘পদ্মা‘র ইঞ্জিন রুমে আঘাত করে ইঞ্জিন বিধস্ত করে। হতাহত হন অনেক নাবিক। পদ্মা’র পরিনতিতে পলাশের অধিনায়ক লে. কমান্ডার রায় চৌধুরী নাবিকদের জাহাজ ত্যাগের নির্দেশ দেন। রুহুল আমিন এই আদেশে ক্ষিপ্ত হন। তিনি উপস্থিত সবাইকে যুদ্ধ বন্ধ না করার আহ্বান করেন। কামানের ক্রুদের বিমানের দিকে গুলি ছুঁড়তে বলে তিনি ইঞ্জিন রুমে ফিরে আসেন। কিন্তু অধিনায়কের আদেশ অমান্য করে বিমানগুলো চ্যালেঞ্জ করা হয়নি। বিমানগুলো উপর্যুপরি বোমাবর্ষণ করে পলাশের ইঞ্জিনরুম ধ্বংস করে দেয়। শহীদ হন রুহুল আমিন। রূপসা নদীর পাড়ে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

লোকসংবাদ | Loksangbad | The First Bangla Online Newspaper from Noakhali সাজসজ্জা করেছেন মুকুল | কপিরাইট © ২০২০ | লোকসংবাদ | ব্লগার

Bim থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.