বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের নাতি (বড় মেয়ে নুরজাহানের ছেলে) সোহেল চৌধুরী জানান, বিভিন্ন সময় তাঁরা সরকারের কাছে তাদের নানার গ্রামের বাড়িতে তাঁর (বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের) স্মৃতি রক্ষার্থে কিছু একটা করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
রাজনৈতিক সরকারগুলো বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিলেও বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে সেই দাবির বাস্তবায়ন হওয়ায় তাদের পাশাপাশি গোটা রুহুল আমিন নগরবাসী
গর্বিত। তিনি জানান, ২০০৮ সালের গত ১২ মার্চ তৎকালীন সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ শহীদ মো: রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে কমপ্লেক্সটি দেখাশোনার জন্য একজন কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং বিদ্যুৎ বিলসহ আনুসাঙ্গিক খরচও জেলা পরিষদের থেকে দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, তাঁর মা ও মামাদের দান করা ২০ শতক জমির উপর নির্মিত এ শহীদ মো: রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরে বিভিন্ন সময়ে বীরশ্রেষ্ঠের পরিবারকে দেওয়া সরকারি এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পদকের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিভিন্ন বই, উপন্যাস, ধর্মীয়বই, ছোটদের বই এবং সেনাপ্রধানের দান করা দুইসেট কম্পিউটার স্থান পেয়েছে। তবে; বইয়ের সল্পতার কারণে গ্রন্থাগার হিসেবে এটি এখনো পূর্ণাঙ্গতা পায়নি।
গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর দেখতে আসা দর্শণার্থী একই এলাকার কলেজ ছাত্র মোর্শেদ আলম জানান, তারা আসা করছেন সরকার এই স্মৃতি কমপ্লেক্সকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সম্মলিত একটি পূর্ণাঙ্গ জাদুঘর হিসেবে গড়ে তুলবেন। যাতে অত্র অঞ্চলের তার মতো নতুন প্রজন্মের সন্তানরা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে। তবে; স্বাধীনতার ৩৯ বছরেও এই বীরের গ্রামে সকরারিভাবে কোন শহীদ মিনার নির্মাণ না হওয়ার বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক বলে তিনি মন্তব্য করেন। একই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের বলেন, জাতীয়ভাবে স্বীকৃত এ মহান বীরের বাড়ি তাদের গ্রামে হওয়ার পাশাপাশি তাঁর নামে গ্রামের নাম এবং স্মৃতি জাদুঘর নির্মিত হওয়ায় তারা নিজেদের খুবই গর্বিত মনে করছেন।
বীরশ্রেষ্ঠের গ্রামের বাড়িতে বর্তমানে তাঁর ছেলে শওকত আলী (কিছুটা মানসিক রোগী) ও তাঁর স্ত্রী রাবেয়া বেগম এবং তাদের চারবছর বয়সের একমাত্র কন্যা সন্তান রয়েছেন। বীরশ্রেষ্ঠের পরিবার হিসেবে সরকারের দেওয়া ভাতার টাকায় এবং বোনদের সহযোগীতায় তাদের সংসার চলছে বলে জানান বীরশ্রেষ্ঠের ছেলে শওকত আলী। পিতার নামে সরকারিভাবে স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মিত হওয়ায় তাঁর (বীরশ্রেষ্ঠ) বীরত্ব এবং এই দেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে মানুষ আরো বেশী জানতে পারবে বলে জানান তিনি।
- আবু নাছের মঞ্জু