পূর্বে নির্মিত পুরাতন ও মরচেপড়া লেডিস টাওয়ারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ চলছে এখানে। নতুন কোন এডিপির ছোঁয়া দীর্ঘ ২০ বছরের মধ্যেও অত্র এলাকার বিদ্যুৎ গ্রাহক বা এলাকাবাসী পায়নি। বাৎসরিক মেরামত এবং সংস্কার কাজ ও উল্লেখযোগ্য হয়নি। যদিও ৩-৪ বছর পর পর মেরামত ও সংস্কার কাজ হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল। অত্র সরবরাহ কেন্দ্রের আওতায় প্রায় সাড়ে ৮হাজার গ্রাহক রয়েছে। অথচ বিদ্যুৎ লাইন মেরামত ও সংস্কারের বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ না নেওয়ায় স্টিলের খুঁটি এবং লেডিস টাওয়ারের গোড়া নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঝড়-তুফান হলে যে কোন সময় মারাত্মক বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) আওতাধীন বিদ্যুৎ লাইন নবায়ন, সংস্কার, মেরামত ও স¤প্রসারণের অনেক কর্মসূচী থাকলেও এখানে ১৮ শহর প্রকল্প, ১৪ শহর প্রকল্প, ৯ শহর প্রকল্পের কোন কাজ হয়নি। যে সকল এলাকায় এ প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ হয়েছে ওই সকল এলাকার হাজার হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক বিদ্যুতের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের নীতি নির্ধারকদের অসহযোগিতার কারণে বসুরহাট বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের নতুন কোন প্রকল্পের কাজ না হওয়ায় হাজার হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক যন্ত্রনা ভোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বসুরহাট বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রকে চলমান ‘আরবান প্রকল্পে’র অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করেছে এলাকার জনগন। এতে বিদ্যুৎ লাইনের সংস্কার মেরামত, নবায়ন ও স¤প্রসারণ কাজের মাধ্যমে প্রায় ৮ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহকসহ এলাকার কয়েক লক্ষ মানুষের সমস্যা দূর করার নির্মিত্তে আরো একটি ১১ কেভি লাইনের মাধ্যমে বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু রাখার ব্যবস্থা জোর দাবি করা হয়েছে।
এসকল সমস্যার বিষয়ে বসুরহাট পৌসভার মেয়র কামাল উদ্দিন চৌধুরী ও আবাসিক প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া স্থানীয় সংসদ সদস্য ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন বলে জানান। স্থানীয় সংসদ সদস্য ওবায়দুল কাদের বিষয়টি লিখিতভাবে বসুরহাট বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের বিতরণ লাইনও সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি সংস্কার করার নির্মিতে ‘আরবান প্রকল্পে’ অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মোঃ এনামুল হককে ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০১০ইং তারিখে পত্রের মাধ্যমে জানিয়েছেন। কিন্তু অধ্যবধি সময়ে পরবর্তি অগ্রগতি জানা যায়নি। বসুরহাট বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রে একদিকে জনবল সংকট, অপরদিকে লজেষ্টিক সাপের্টে যানবাহন সমস্যাসহ নানা সমস্যা থাকার সত্বেও জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। এ অফিসে ২০ জন টেকনিক্যাল কর্মচারীর মধ্যে আছে মাত্র ৩ জন। এ কেন্দ্রে সাড়ে ৮ হাজার গ্রাহকের জন্য মাত্র ২জন রিডার প্রদস্ত আছে। ফলে গ্রাহকদের কাছে সঠিক সময় বিল পৌছানো সম্ভব হয় না।
এ ব্যাপারে বসুরহাট বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের আবাসিক প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া জানান, নানা সংকটের মধ্যেও অনেক কষ্ট করে কাজ চালিয়ে নিচ্ছি। দু’হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহকের জন্য জনবল চাহিদা দেয়া রয়েছে ২০ জন। তার মধ্যে ৩ জন দিয়ে কাজ চালাচ্ছি। বর্তমানে গ্রহাক সংখ্যা সড়ে ৮ হাজারেরও বেশী। জনবল পূর্বের চাহিদা মোতাবেক তাও নেই। বসুরহাট বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রেকে ‘আরবান প্রকল্পের’ অন্তর্ভূক্ত করে তা বাস্তবায়ন করা হলে এখানকার বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সংকট এবং সমস্যা দূরীভূত হবে। সাড়ে ৮ সহস্রাধিক গ্রাহক তাদের চাহিদানুযায়ী সম্পূর্ণ গ্রাহকসেবা পাবে বলে আবাসিক প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া মনে করেন।
- মোঃ শরফুদ্দিন শাহীন