আমাদের প্রিয় শহর মাইজদী। জন্ম শহর মাইজদী। যে শহরটিকে জীবনের এতোটা বছর চিনে আসছিলাম, বড় আপন মনে করতাম, সেই শহরটিকে আজ বড্ড ধূসর মনে হয়। বড় অচেনা মনে হয়। বড় বেমানান একটা জেলা শহর মাইজদী। কোলাহলপূর্ণ একটি শহরটা আজ বিষময় হয়ে উঠেছে। এ শহরটিকে নিয়ে গর্ব করেছিলো বাংলা ভাষার অন্যতম কবি বুদ্ধদেব বসু, অবশ্য তিনি নতুন এ শহরটির কথা বলেননি, বলেছেন মেঘনা নদী গর্ভে হারিয়ে যাওয়া শহরটির কথা। আমরাও গর্ব করি আমাদের এ শহরটাকে নিয়ে। আমাদের ছেলেবেলা দিন, আমাদের বড় হয়ে উঠা এ শহর। একদা এ শহরে ধূলো মেখে আমরা এখানে-ওখানে মাড়িয়েছি।
আজ আমাদের এ শহর নয় কেবল, সারাপৃথিবীকে তছনছ করে দিয়েছে, একটি অদৃশ্য দানব। একটি ভাইরাস, করোনা ভাইরাস। যখন বাংলাদেশে অনেক জেলায় করোনা আক্রান্ত করে ফেলেছে, তখন আমাদের নোয়াখালী জেলা করোনায় আক্রান্ত হয় নি। মানুষ মনে আনন্দে এখানে-সেখানে ঘুরে বেড়িয়েছে। কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানার মধ্যে নেই ছিলো অনেকে। ‘আমাদের কিচ্ছু হবে না, করোনা আমাদের কিচ্ছু করতে পারবে না, দ্যাখছো আমরা হেডম জাহাজের কচ্ছপ!
তারপর কী হলো! সব হেডমকে চুর্ণ-বিচুর্ণ করে একদিন এ শহরে করোনা ঢুকে পড়ে। আর এখন এ দানবটা এ শহরটাকে, এ জেলাটাকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে। দিন দিন আক্রান্ত সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন লাশের সংখ্যা গুণতে হয়। দানবটা প্রচন্ড রক্তচোষা হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশে অর্থনীতি চাকা ঘুরে কিভাবে? ভাবুন তো, কারা চালায় বাংলাদেশের অর্থনীতি?
ঢাকা, চট্টগ্রামে যারা ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে জড়িত তাদের অধিকাংশ নোয়াখালীর। এছাড়া বিশ্বে অনেক দেশে ধনী আছে নোয়াখালীর মানুষ। আমি যখন পশ্চিমবঙ্গে যাই, অনেককে দেখি, যারা ওখানে ব্যবসা-বাণিজ্যে সুনাম অর্জন করছে। যাদেরকে নোয়াখাইল্যা বলা হয়। যাদের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স আসে, প্রবাসীদের একটা বড় অংশ হচ্ছে নোয়াখালী। এক সময় দেশে বিভিন্ন অঙ্গনে এই নোয়াখালীর মানুষ নেতৃত্ব দিয়েছে। অন্য অঞ্চলের মানুষ এ অঞ্চলের মানুষকে ঘৃণা চোখে দেখে। আঞ্চলিকতার বিদ্বেষ। ক্ষমতাশীন দলের সাধারণ সম্পাদক এই নোয়াখালীর ব্যক্তি। অথচ এই নোয়াখালীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল নেই। ভাবা যায়?
জননেতা আবদুল মালেক উকিলের আনুকূল্যে নোয়াখালীতে যে জেনারেল হাসপাতালটি আছে, সেটির অবস্থা প্রায় ভঙ্গুর। দীর্ঘদিন ধরে এ হাসপাতালটি নতুন করে স্থাপনের দাবি জানালেও এটি বাস্তবায়নে কোনো তোড়জোড় নেই।
জিয়াউর রহমান যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন নোয়াখালীতে একটি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কিন্তু কয়েক দশক পার হয়ে গেলো, সেই মেডিক্যাল কলেজটি ক্ষমতাশীন বিএনপি করলো না। পরে আওয়ামী লীগ সরকার বেগমগঞ্জে আবদুল মালেক উকিলের নামে একটি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করে। কিন্তু হাসপাতাল নেই। অস্থায়ীভাবে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালটিকে মেডিক্যাল কলেজের হাসপাতাল ব্যবহার করা হয়। আমার জানা নেই কোথাও এইরকম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল আছে কীনা, হাসপাতাল এক জায়গায় আর হাসপাতাল আরেক জায়গায়। কথা ছিলো কলেজের পাশে ৫০০ শয্যা হাসপাতাল করা হবে। একনেকে পাশ হয়েছে। আজও সেটি হয়নি।
পুরো নোয়াখালী জুড়ে যখন করোনা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, তখন নোয়াখালীর মানুষ কোথায় চিকিৎসা নেবে, সে ব্যাপারে সন্দিহান। মাইজদীতে শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম ভবনে করোনা চিকিৎসার জন্য একটি অস্থায়ী হাসপাতাল করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে কোনো সিরিয়াস রোগীকে চিকিৎসা দেয়ার মতো ব্যবস্থা নেই। অথচ নোয়াখালী শহরেই অনেকগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। যেগুলোতে করোনা চিকিৎসা কেন্দ্র করা যেতে পারে।
আমাদের নোয়াখালী-৪ আসনে সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী মহান মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সাথে নোয়াখালীর স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে কথা বলেন। একটি ১০ শয্যার আইসিউর কথা বলেন। মন্ত্রী মহোদয় আশ্বস্ত করার পরও আইসিউ নোয়াখালী মানুষ পায় নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হলো। অক্সিজেনের অভাব এ শহরে। এ শহরটা অবহেলিতই থেকে গেলো। নোয়াখালীর মানুষ বঞ্চিতই থেকে গেলো। আর নোয়াখালীর মানুষ ধুঁকে ধুঁকে মারা যাচ্ছে। কষ্ট পেয়ে মারা যাচ্ছে। অনেক তরতাজা প্রাণ ঝরে গেছে। আমাদের জনপ্রতিনিধিরা এখনও নির্বিকার? নির্বিকার আমরাও?
ছোট্ট একটা জেলা চাঁদপুর। সেই জেলার মন্ত্রী দীপু মনি তাঁর জেলার হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা করার কথা ঘোষণা দেন। আমাদেও প্রভাবশালী মন্ত্রী কেনো পারেন না? পাশের জেলা ফেনীতে আওয়ামী লীগ নেতা আলাহউদ্দিন নাসিমের উদ্যোগে জেনারেল হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও আইসিউর ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ আমাদের জেলা শহর, বাংলাদেশের একটি পুরাতন শহর এখন অবহেলিতই থেকে গেলো।
আমরা যে পৌরসভায় থাকি, সে পৌরসভার মেয়র শহীদউল্যাহ খান সোহেল তার পৌর এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও করেছেন।
সংসদ সদস্য মহোদয় সম্প্রতি বলেছেন, তিনি নোয়াখালীতে আইসিউ স্থাপনে প্রয়োজনীয় অর্থ সহযোগিতা করবেন। ইতিপূর্বে তিনি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনা টেস্ট করার জন্য একটি ল্যাব স্থাপনের জন্য নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেছেন। সংসদ সদস্য কিংবা নোয়াখালী পৌর মেয়র একা কেনো, নোয়াখালীর আরো যারা বিত্তবান আছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই এগিয়ে আসুন, আমরা আমাদের শহরে একটি সবচেয়ে উন্নত মানের আধুনিক হাসপাতাল বানিয়ে ফেলি। যদি সদিচ্ছা থাকে অবশ্যই সম্ভব। কেনো সম্ভব নয়? বিত্তবানরা, যে শহরটি, যে জেলাটি আপনাকে আলো-বাতাস, সংস্কৃতি দিয়ে বড় করে তোলেছে, সেই শহরে, সেই জেলায় কিছু দেয়ার দায়িত্ব এখন আপনার। ঋণ শোধ করবার সময় এখন আপনার। বসুন্ধরা গ্রুপ যদি পারে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় করোনা হাসপাতাল বানাতে। নোয়াখালীর মানুষও কেনো পারবে না?
বহু বছর পর একজন প্রশাসক নোয়াখালীর মানুষ পেয়েছে। জেলার বিভিন্ন বিষয়ে তিনি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন। যতদূর শুনেছি, তার কাছে গিয়ে কেউ হতাশ বা বিমুখ হয়ে আসেনি। এই জেলা প্রশাসকের একটা বিষয়ে আমাকে আনন্দিত করছে। তা হলো জনবান্ধব মনস্কতা। এই করোনাপরিস্থিতিতে তিনি তার জেলার মানুষকে নানাভাবে সচেতন করার চেষ্টা করছেন। সামাজিক গণমাধ্যমে মানুষের সাথে থাকার সচেষ্ট আছেন। আপ্রাণভাবে তিনি নিজে তত্ত্বাবধান করছেন। মানুষ কথা শুনছে না। তবুও তিনি বলে যাচ্ছেন। তাঁর সর্বোচ্চ দায়িত্বপালন করে যাচ্ছেন। তিনি আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেনÑপ্রিয় জেলাবাসী, আমরা আর কবে বুঝবো? সব হারিয়ে বুঝতে গেলে আর কিছুই ফিরে পাবোনা। অবহেলা করে নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না। সবাই ঘরে থাকি।
আসুন আমরা সবাই ঘরে থাকি। আর স্বজন আমরা হারাতে চাই না।
১৭.০৬.২০২০
আজ আমাদের এ শহর নয় কেবল, সারাপৃথিবীকে তছনছ করে দিয়েছে, একটি অদৃশ্য দানব। একটি ভাইরাস, করোনা ভাইরাস। যখন বাংলাদেশে অনেক জেলায় করোনা আক্রান্ত করে ফেলেছে, তখন আমাদের নোয়াখালী জেলা করোনায় আক্রান্ত হয় নি। মানুষ মনে আনন্দে এখানে-সেখানে ঘুরে বেড়িয়েছে। কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানার মধ্যে নেই ছিলো অনেকে। ‘আমাদের কিচ্ছু হবে না, করোনা আমাদের কিচ্ছু করতে পারবে না, দ্যাখছো আমরা হেডম জাহাজের কচ্ছপ!
তারপর কী হলো! সব হেডমকে চুর্ণ-বিচুর্ণ করে একদিন এ শহরে করোনা ঢুকে পড়ে। আর এখন এ দানবটা এ শহরটাকে, এ জেলাটাকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে। দিন দিন আক্রান্ত সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন লাশের সংখ্যা গুণতে হয়। দানবটা প্রচন্ড রক্তচোষা হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশে অর্থনীতি চাকা ঘুরে কিভাবে? ভাবুন তো, কারা চালায় বাংলাদেশের অর্থনীতি?
ঢাকা, চট্টগ্রামে যারা ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে জড়িত তাদের অধিকাংশ নোয়াখালীর। এছাড়া বিশ্বে অনেক দেশে ধনী আছে নোয়াখালীর মানুষ। আমি যখন পশ্চিমবঙ্গে যাই, অনেককে দেখি, যারা ওখানে ব্যবসা-বাণিজ্যে সুনাম অর্জন করছে। যাদেরকে নোয়াখাইল্যা বলা হয়। যাদের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স আসে, প্রবাসীদের একটা বড় অংশ হচ্ছে নোয়াখালী। এক সময় দেশে বিভিন্ন অঙ্গনে এই নোয়াখালীর মানুষ নেতৃত্ব দিয়েছে। অন্য অঞ্চলের মানুষ এ অঞ্চলের মানুষকে ঘৃণা চোখে দেখে। আঞ্চলিকতার বিদ্বেষ। ক্ষমতাশীন দলের সাধারণ সম্পাদক এই নোয়াখালীর ব্যক্তি। অথচ এই নোয়াখালীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল নেই। ভাবা যায়?
জননেতা আবদুল মালেক উকিলের আনুকূল্যে নোয়াখালীতে যে জেনারেল হাসপাতালটি আছে, সেটির অবস্থা প্রায় ভঙ্গুর। দীর্ঘদিন ধরে এ হাসপাতালটি নতুন করে স্থাপনের দাবি জানালেও এটি বাস্তবায়নে কোনো তোড়জোড় নেই।
জিয়াউর রহমান যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন নোয়াখালীতে একটি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কিন্তু কয়েক দশক পার হয়ে গেলো, সেই মেডিক্যাল কলেজটি ক্ষমতাশীন বিএনপি করলো না। পরে আওয়ামী লীগ সরকার বেগমগঞ্জে আবদুল মালেক উকিলের নামে একটি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করে। কিন্তু হাসপাতাল নেই। অস্থায়ীভাবে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালটিকে মেডিক্যাল কলেজের হাসপাতাল ব্যবহার করা হয়। আমার জানা নেই কোথাও এইরকম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল আছে কীনা, হাসপাতাল এক জায়গায় আর হাসপাতাল আরেক জায়গায়। কথা ছিলো কলেজের পাশে ৫০০ শয্যা হাসপাতাল করা হবে। একনেকে পাশ হয়েছে। আজও সেটি হয়নি।
পুরো নোয়াখালী জুড়ে যখন করোনা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, তখন নোয়াখালীর মানুষ কোথায় চিকিৎসা নেবে, সে ব্যাপারে সন্দিহান। মাইজদীতে শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম ভবনে করোনা চিকিৎসার জন্য একটি অস্থায়ী হাসপাতাল করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে কোনো সিরিয়াস রোগীকে চিকিৎসা দেয়ার মতো ব্যবস্থা নেই। অথচ নোয়াখালী শহরেই অনেকগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। যেগুলোতে করোনা চিকিৎসা কেন্দ্র করা যেতে পারে।
আমাদের নোয়াখালী-৪ আসনে সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী মহান মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সাথে নোয়াখালীর স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে কথা বলেন। একটি ১০ শয্যার আইসিউর কথা বলেন। মন্ত্রী মহোদয় আশ্বস্ত করার পরও আইসিউ নোয়াখালী মানুষ পায় নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হলো। অক্সিজেনের অভাব এ শহরে। এ শহরটা অবহেলিতই থেকে গেলো। নোয়াখালীর মানুষ বঞ্চিতই থেকে গেলো। আর নোয়াখালীর মানুষ ধুঁকে ধুঁকে মারা যাচ্ছে। কষ্ট পেয়ে মারা যাচ্ছে। অনেক তরতাজা প্রাণ ঝরে গেছে। আমাদের জনপ্রতিনিধিরা এখনও নির্বিকার? নির্বিকার আমরাও?
ছোট্ট একটা জেলা চাঁদপুর। সেই জেলার মন্ত্রী দীপু মনি তাঁর জেলার হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা করার কথা ঘোষণা দেন। আমাদেও প্রভাবশালী মন্ত্রী কেনো পারেন না? পাশের জেলা ফেনীতে আওয়ামী লীগ নেতা আলাহউদ্দিন নাসিমের উদ্যোগে জেনারেল হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও আইসিউর ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ আমাদের জেলা শহর, বাংলাদেশের একটি পুরাতন শহর এখন অবহেলিতই থেকে গেলো।
আমরা যে পৌরসভায় থাকি, সে পৌরসভার মেয়র শহীদউল্যাহ খান সোহেল তার পৌর এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও করেছেন।
সংসদ সদস্য মহোদয় সম্প্রতি বলেছেন, তিনি নোয়াখালীতে আইসিউ স্থাপনে প্রয়োজনীয় অর্থ সহযোগিতা করবেন। ইতিপূর্বে তিনি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনা টেস্ট করার জন্য একটি ল্যাব স্থাপনের জন্য নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেছেন। সংসদ সদস্য কিংবা নোয়াখালী পৌর মেয়র একা কেনো, নোয়াখালীর আরো যারা বিত্তবান আছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই এগিয়ে আসুন, আমরা আমাদের শহরে একটি সবচেয়ে উন্নত মানের আধুনিক হাসপাতাল বানিয়ে ফেলি। যদি সদিচ্ছা থাকে অবশ্যই সম্ভব। কেনো সম্ভব নয়? বিত্তবানরা, যে শহরটি, যে জেলাটি আপনাকে আলো-বাতাস, সংস্কৃতি দিয়ে বড় করে তোলেছে, সেই শহরে, সেই জেলায় কিছু দেয়ার দায়িত্ব এখন আপনার। ঋণ শোধ করবার সময় এখন আপনার। বসুন্ধরা গ্রুপ যদি পারে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় করোনা হাসপাতাল বানাতে। নোয়াখালীর মানুষও কেনো পারবে না?
বহু বছর পর একজন প্রশাসক নোয়াখালীর মানুষ পেয়েছে। জেলার বিভিন্ন বিষয়ে তিনি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন। যতদূর শুনেছি, তার কাছে গিয়ে কেউ হতাশ বা বিমুখ হয়ে আসেনি। এই জেলা প্রশাসকের একটা বিষয়ে আমাকে আনন্দিত করছে। তা হলো জনবান্ধব মনস্কতা। এই করোনাপরিস্থিতিতে তিনি তার জেলার মানুষকে নানাভাবে সচেতন করার চেষ্টা করছেন। সামাজিক গণমাধ্যমে মানুষের সাথে থাকার সচেষ্ট আছেন। আপ্রাণভাবে তিনি নিজে তত্ত্বাবধান করছেন। মানুষ কথা শুনছে না। তবুও তিনি বলে যাচ্ছেন। তাঁর সর্বোচ্চ দায়িত্বপালন করে যাচ্ছেন। তিনি আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেনÑপ্রিয় জেলাবাসী, আমরা আর কবে বুঝবো? সব হারিয়ে বুঝতে গেলে আর কিছুই ফিরে পাবোনা। অবহেলা করে নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না। সবাই ঘরে থাকি।
আসুন আমরা সবাই ঘরে থাকি। আর স্বজন আমরা হারাতে চাই না।
১৭.০৬.২০২০