সর্বশেষ

লক্ষ্মীপুরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর সংরক্ষণের উদ্যোগ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ
মুক্তিযুদ্ধের সময় বাগবাড়িতে অবস্থিত বিশাল সারের গুদামটি ছিল লক্ষ্মীপুরে পাকিস্তানিদের প্রধান ঘাঁটি। বিভিন্ন স্থান থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামী স্থানীয় বাঙালিদের ধরে এনে এখানে অমানুষিক নির্যাতন করা হত। এরপর রহমতখালী খালের উপর নির্মিত মাদামব্রিজে হত্যা করে খালে ভাসিয়ে দেয়া হত লাশ। বাগবাড়ির এই জায়গাটিকে বলা হত টর্চার সেল। যুদ্ধশেষে এই টর্চার সেল লাগোয়া গণকবর চিহ্নিত হলেও সংরক্ষণ কোন ধরনের উদ্যেগে নেওয়া হয়নি।। স্বাধীনতার পর এই স্থানটি সংরক্ষণ না করে এখানে স্থাপিত হয় গণশৌচাগার। অবশেষে ৩৯ বছর পর লক্ষ্মীপুর পৌর কর্তৃপক্ষ গণশৌচাগারটি ভেঙে বধ্যভূমি হিসেবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা গেছে।। ইতোমধ্যে এখানে  কাজ শুরু হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহের জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এখানে বধ্যভূমি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ কাজে যাবতীয় ব্যয় ভার পৌর কর্তৃপক্ষ বহন করবে।
 জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুরকে হানাদার মুক্ত করে মুক্তিযোদ্ধারা। এসময় লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অন্তত ১৭ টি সম্মুখযুদ্ধ হয় হানাদারদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের।
১৯৭১ সালের ৪ ডিসম্বর ভোরে লক্ষ্মীপুর শহরের বাগবাড়ীর প্রধান ঘাঁটি আক্রমণ করে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। এসময় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল গুলি বর্ষণের মুখে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় ওই ঘাঁটির দুই শতাধিক রাজাকার ও হানাদার সদস্য। এটাই ছিল লক্ষ্মীপুরে হানাদারবিরোধী মুক্তিযোদ্ধাদের শেষ প্রতিরোধ। এই প্রতিরোধ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ হতাহত না হলেও যুদ্ধের ৯ মাসে লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন স্থানে ১৭ টি খণ্ড যুদ্ধে শহীদ হন মাযহারুল মনির সবুজ, রবিন্দ্র সাহা, আব্দুল হালিম বাসুসহ ৩৭ জন মুক্তিযোদ্ধা। এছাড়া তোফায়েল আহাম্মদ, শান্তি শীল, নূরজামান, পার্বতী পালসহ পাঁচ শতাধিক স্বাধীনতাকামী নিরস্ত্র বাঙালিও শহিদ হন এই সময়ে।
লক্ষ্মীপুর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের  আনোয়ারুল হক মাষ্টার  বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার রফিকুল ইসলাম মাস্টারের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ১ ডিসেম্বর মিলেশিয়াদের বাগবাড়ী ক্যাম্প অনেক দূর থেকে ঘেরাও করে। প্রবল গুলি বর্ষণ করতে করতে ঘাঁটির চারিদিক রাজাকার ও হানাদারদের অবরুদ্ধ করে ফেলে। মুক্তিযোদ্ধাদের সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে অসহায় হয়ে যায় তারা। ৪ ডিসেম্বর ভোরে হানাদাররা আত্মসমর্পণ শেষে লক্ষ্মীপুর ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়।
লক্ষ্মীপুরে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আ ও ম শফিক উল্যা বলেন, 'নভেম্বরের শেষের দিকে রায়পুর আলীয়া মাদ্রাসায় হানাদারদের ক্যাম্প আক্রমণ করে মুক্তিযোদ্ধারা। কমান্ডার হাবিলদার আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে এই যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম বাসু শহিদ হন।'


  • রবিউল ইসলাম খান

লোকসংবাদ | Loksangbad | The First Bangla Online Newspaper from Noakhali সাজসজ্জা করেছেন মুকুল | কপিরাইট © ২০২০ | লোকসংবাদ | ব্লগার

Bim থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.