সর্বশেষ

ক্যাম্পাসে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় নোয়াখালী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ সমর্থিত ৬ ছাত্র বহিষ্কার

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ সমর্থিত ৬ ছাত্রকে বহিস্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, ছাত্রহল, শিক্ষকদের মাইক্রোবাস ও শিক্ষার্থীদের বাসে ভাঙচুরের ঘটনায় সোমবার শৃংখলা বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভা শেষে রাতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রেরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বহিস্কৃতরা হলেন-সিএসটিই দ্বিতীয় ব্যাচের মো: মঞ্জুর আলম মহসীন, ত্রিপাটি চাকমা, ফিশারিজ এন্ড মেরিন সায়েন্সের দ্বিতীয় ব্যাচের আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, চতুর্থ ব্যাচের বিনয় রায়, এপ্ল্যায়েড কেমিষ্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় ব্যাচের মো: মাহমুদুর রহমান, মো: আমির হামযা দিদার।
সভায় ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের লক্ষ্যে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া পর্যন্ত এই বহিষ্কারাদেশ বহাল থাকবে। বহিস্কৃতরা ছাত্রলীগর নেতাকর্মী।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর মোঃ আনিছুর জামান বাদী হয়ে বহিস্কৃত ছয় ছাত্রের নাম উল্লেখ করে এবং আরো ১০/১৫ জন অজ্ঞাত যুবককে আসামী করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাংচুরের ঘটনায় সুধারাম মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

ভাংচুরের ঘটনায় সোমবার শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমতি আলাদা সভা করে ভাংচুরের সাথে জড়িত ছাত্রদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপচার্য্যরে কাছে দাবি জানায়। বিষয়গুলো নিয়ে দিনভর খোঁজ নেওয়ার পর বিকাল চারটায় বিশ্ববিদ্যালয় আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভা শুরু হয় এবং সাড়ে তিন ঘন্টার মতো সভা শেষে এই ছয় ছাত্রকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত হয় বলে উপাচার্য্য প্রফেসর এ কে এম সাঈদুল হক চৌধুরী জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসিই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ও নোবিপ্রবি ছাত্রলীগের নেতা মসহিন গ্রুপের সমর্থক কামরুজ্জামান সজিবকে নোয়াখালী শহর থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে সোনাপুর এলাকায় অজ্ঞাত একদল সন্ত্রাসী পিটিয়ে আহত করে। সেখান থেকে তাঁকে জেলা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ খবর ক্যাম্পাসে পৌঁছলে মহসিন ও তাঁর অনুসারিরা সজিবকে দেখতে যেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবাস চায় পরিবহন পুলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক রবিউল হাসান রনির কাছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে আলোচনার পর রনি জানান মাইক্রোবাস দেওয়া সম্ভব নয়। পরবর্তীতে মহসিন এম্বুল্যান্সে করে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসে সজিবকে।

সন্ধ্যায় পর মহসিন গ্রুপের নেতাকর্মীরা শিক্ষক ডরমিটরিতে গিয়ে গালমন্দ করে এবং সেখানে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবাস ভাংচুর করে। একই সময়ে প্রশাসনিক ভবনের নীচতলার অন্তত দশটি জানালার, একটি বাসের গ্লাস ভাঙচুর করে। পরে তাঁরা ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হলে গিয়ে ছাত্রলীগের মাজেদ গ্রুপের সমর্থক ছাত্রদের ১০/১২টি কক্ষ ও কম্পিউটার ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে।

ছাত্রলীগের নেতা মো. মহসিন তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রকে ক্যাম্পাসের বাইরে পিটিয়ে আহত করা হলো। তাকে চিকিৎসা দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি চাইলেও পাওয়া যায়নি। একারণেই ক্ষুব্ধ হয়ে সাধারণ ছাত্ররা কিছু জানালা ভাংচুর করেছে। এখন রাজনৈতিক রঙ ছড়ানো হচ্ছে।

অন্যদিকে নিজেদের ১১টি কক্ষে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় এবং ৫টি ল্যাপটপ লুট, ৪টি কম্পিউটার ভাংচুর, আসবাবপত্র ভাংচুর এবং জামাকাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে ছাত্রলীগ সমর্থিত অপর গ্রুপের নেতা আবদুল মাজেদ।
উপাচার্য এ কে এম সাঈদুল হক চৌধুরী জানান, ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে মহসিনের নেতৃত্বে এই ছাত্ররা দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে অরাজকতা চালিয়ে আসছে।
#

  • আবু নাছের মঞ্জু

লোকসংবাদ | Loksangbad | The First Bangla Online Newspaper from Noakhali সাজসজ্জা করেছেন মুকুল | কপিরাইট © ২০২০ | লোকসংবাদ | ব্লগার

Bim থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.