নোয়াখালী ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ১৯২ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ভাঙচুর, চাঁদাবাজি, লুটপাট ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার রাতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের পরিবারে তিন সদস্য বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ের করেন।
সুধারাম থানা সুত্রে জানা গেছে, তিনটি মামলার মধ্যে প্রথমটি দায়ের করেন শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু নাছেরের ভাই আবু তাহের। এ মামলায় সদর উপজেলা যুবদলের সভাপতি ভিপি জসিম উদ্দিন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক আবদুল করিম মুক্তা ও কলিম উল্লাহসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ৩০-৩৫ জনকে আসামি করা হয়।
দ্বিতীয় মামলাটি দায়ের করেন আবু নাছেরের আরেক ভাই আবু সাদেক। এ মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা শাখার আহ্বায়ক শাহ জাফরউল্লা রাসেল এবং যুগ্ম আহবায়ক গোলাম রসুল মনা সহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো ৩০-৩৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
তৃতীয় মামলাটি দায়ের করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র হারুনুর রশীদ আজাদের ভাতিজা আবদুল্লাহিল ওয়ায়েছ মারুফ। এ মামলায় জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নরুল আমিন খান, সাধারন সম্পাদক ছাবের আহমেদ, সাংগনিক সম্পাদক আবু হাসান মো. নোমান, সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক সামছুদ্দোহা মিঠু ও নোয়াখালী সরকারি কলেজ শাখার আহবায়ক জহিরুল ইসলাম তারেক সহ ৩১ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরো ৩০-৩৫ জনকে আসামি করা হয়।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন তরফদার মামলা রেকর্ডভুক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মীর জাহিদুল হক রনিকে দুইটি ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) এয়াছিন ফারুককে একটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এদিকে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন জেলা যুবদলের সভাপতি মাহবুব আলমগীর আলো, সাধারণ সম্পাদক কামাক্ষ্যা চন্দ্র দাস, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরুল আমিন খান, সাধারণ সম্পাদক ছাবের আহমেদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শাহ জাফর উল্লা ও যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল করিম।
যৌথভাবে স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নেতৃবৃন্দ এসব মামলা দায়েরের জন্য জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র হারুনুর রশীদ আজাদকে দায়ি করে অভিলম্বে তাঁর বহিস্কার দাবি করেন।
উল্লেখ্য: ছাত্রদলের সদর উপজেলা, নোয়াখালী শহর ও নোয়াখালী সরকারি কলেজ শাখার সম্মেলন আহবানকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শাহজাহান ও জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ আজাদের অনুসারীীদের মধ্যে শহরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ওইদিন রাতেই জেলা প্রশাসন মাকিং করে শুক্রবার ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পুরো শহরে ১৪৪ ধারা জারির মধ্যদিয়ে সব ধরনের মিছিল ও সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষনা করে। এরপর ১৪৪ ধারা জারির মধ্যেই জেলা ছাত্রদলের নেতারা শহরতলীর বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সংগঠনের উল্লেখিত তিনটি ইউনিটের কর্মী সম্মেলন সম্পন্ন করে। এরপর এক পক্ষ অপর পক্ষের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। এনিয়ে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে একই সাথে গ্রেপ্তার আতঙ্ক এবং উত্তেজনা বিরাজ করছে।
- আবু নাছের মঞ্জু