গ্রাম বাসীর উদ্যোগে রুহুল আমিন স্মৃতি সংসদ
গ্রাম বাসীর উদ্যোগে রুহুল আমিন স্মৃতি সংসদ |
নোয়াখালীতে প্রতিষ্ঠার চার বছরেরও পূর্ণতা পায়নি বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর কমপ্লেক্স।
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিনের জম্মস্থান নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার রুহুল আমিন নগরে তাঁর স্মৃতি রক্ষায় ২০০৮ সালে সরকারিভাবে স্থাপন করা হয় বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের পরিবারের দান করা ২০ শতক জমির নির্মিত হয় স্মৃতি কমপ্লেক্স। এখানে আছে বিভিন্ন সময়ে তার পরিবারকে দেয়া সরকারি -বেসরকারি পদকের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধসহ নানা বিষয়ের বই, আছে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক নানা পোস্টার, সাময়িকী আর পত্রপত্রিকা।
বইয়ের স্বল্পতা সহ নানা সংকটে স্মৃতি কমপ্লেক্সটি আজো পূর্ণাঙ্গতা পায়নি। গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর দেখতে আসা দর্শনার্থী নোয়াখালী সরকারি কলেজের ছাত্র মেঞ্জামিন মো. রফি বলেন, ‘একজন বীরশ্রেষ্ঠের নামে স্মৃতি জাদুঘর এতো কম পরিসরে হতে পারে না। আমি সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি যাতে দেশের এতো বড় একজন বীরের নামে প্রতিষ্ঠিত এই জাদুঘরটিকে আরো সম্প্রসারিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আরো অনেক সরঞ্জাম এখানে আনা হয়, বই পুস্তকও আরো বাড়ানো হয়। তাহলে আমরা মুত্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আরো জানতে পারবো’।
এলাকাবাসী ও দর্শনার্র্থীদের দাবি এই কমপ্লেক্সকে ঘিরে সরকারিভাবে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক নানা কর্মকান্ড পরিচালনার; যাতে করে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মো. হানিফ বলেন, ‘সরকার যে জাদুঘরটি এখানে তৈরি করছে, এখানে অনেক কিছুর আজো অভাব রয়েছে। তাই স্বাধীনতা সংগ্রামের এই বীর সেনানীকে সাধারণ মানুষের কাছে আগামী প্রজম্মের কাছে তুলে ধরতে হলে এ জাদুঘরটিকে আরো উন্নত করতে হবে। এখানে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সভা সমাবেশ সহ বিভিন্ন উদ্বুদ্ধকরণ কর্মকা- করতে হবে।’
আর বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের পরিবারের দাবি এ প্রতিষ্টানটিকে আরো আধুনিকায়নের পাশাপাশি সরকারিভাবে এখানে বীরশ্রেষ্ঠের জম্ম ও মৃত্যু বার্ষিকীসহ জাতীয় দিবসগুলো পালনের ব্যবস্থা করার। বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের নাতি (বড় মেয়ে নুরজাহানের ছেলে) বলেন, ‘এ প্রতিষ্ঠানটি করার পর অত্র অলাকায় শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রসার ঘটেছে। এখানে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আরো বিভিন্ন রকম কার্যক্রম পরিচালনা করলে এ এলাকার ছাত্রছাত্রী এবং পরবর্তী প্রজম্ম মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আরো বেশি করে জানতে পারবে বুঝতে পারবে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নিজেদের গড়ে তুলতে পারবে। পাশাপাশি এ স্মৃতি জাদুঘরকে আরো আধুনিকায়ন করে এখানে সরকারিভাবে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের জম্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী সহ জাতীয় দিবসগুলো পালনের ব্যবস্থা করা হয়।’
কমপ্লেক্সেটি তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা পরিষদও প্রতিষ্ঠানটি ঠিকভাবে চলছে না বলে স্বীকার করেছে। নিজেদের অল্প পরিমাণ বাজেট দিয়ে এ ধরণের প্রতিষ্ঠান চালানো সম্ভব নয় বিধায় মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রনালয় থেকে সহযোগীতার কথা বললেন জেলা পরিষদের প্রশাসক ডা. এবিএম জাফর উল্লাহ। তিনি বলেন, ‘এটা প্রপার্লি ম্যান্টিনেন্স করা হচ্ছে না’। স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে জেলা পরিষদে অল্প পরিমাণ যে বাজেট দেয়া হয়, এসবে আসলে সম্ভব নয়। তারপরও করা হচ্ছে, আগামীতে আমারা আরো ভালোভাবে করার চেস্টা করবো। তবে আমি মনে করি, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রনালয় থেকে এ ধরণের প্রতিষ্টানকে রক্ষনাবেক্ষণে অর্থায়ন করার জন্য আলাদা একটা ফান্ড থাকা দরকার।’
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্মৃতি কমপ্লেক্সকে মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ জাদুঘর হিসেবে গড়ে তুলবে সরকার এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসী ও দর্শনার্থীদের।
- আবু নাছের মঞ্জু