সর্বশেষ

দাগনভূঞার লতিরাজ কচু , বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা


আবদুল্লাহ আল-মামুন,ফেনী
দাগনভূঞা উপজেলার ৪০ হেক্টর জমিতে ‘লতিরাজ কচু’র চাষ  হয়েছে। উৎপাদন খরচের চেয়ে অপেক্ষাকৃত লাভ বেশি হওয়ায় ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই কচুর চাষ। অন্যান্য ফসলের চেয়ে পোকার আক্রমন ও রোগবালাই কম হওয়ায় তেমন কীটনাশক ও ব্যয় করতে হয়না।

দীর্ঘ ২ যুগ ধরে দাগনভূঞার জায়লস্কর ইউনিয়নের হীরাপুর, লালপুর, খুশিপুর, বারাহীগুনী গ্রাম কচু চাষের জন্য বিখ্যাত। ক’বছর আগেও এখানকার কৃষকরা লতিরাজ কচু চিনত না। অথচ এখন লতিরাজ কচুর চাহিদা ও চাষ দুটিই বেড়ে গেছে। আর বৃদ্ধি পেয়েছে এর বহুবিধ ব্যবহার। লতিরাজ কচু প্রধানত চাষ হতো শুধু লতা হিসেবে খাওয়ার জন্য। কিন্তু যতই দিন বাড়ছে ততই লতিরাজ কচুর লতা, পাতা, কান্ড সব কিছুই খাবার হিসেবে প্রচলন বাড়ছে। অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর এ কচু এখন প্রতিটি ঘরে ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশ থেকে সংগৃহিত ১০০ টি পানি কচুর জাত থেকে বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লতিরাজ জাতটি ১৯৯৮ সালে অনুমোদিত হয়। এই লতিরাজ কচুর লতি (লতা) মোটা এবং প্রতিগাছে অপেক্ষাকৃত বেশি লতি জম্মায়। পাতা সবুজ ও গাছ মাঝারি, জীবনকাল ১৮০ থেকে ২১০ দিন। সাধারণত বছরে হেক্টর প্রতি ২৫ থেকে ৩০ টন লতি এবং প্রায় ১৮ থেকে ২২ টন কান্ড উৎপন্ন হয়। লতি সিদ্ধ করলে গলায় চুলকানি অনুভূত হয় না।
জনপ্রিয় এই কচুর জাতটি এখন দাগনভূঞার পূর্বচন্দ্রপুর মডেল ইউনিয়নের চন্দ্রদ্বীপ, ওমরাবাদ, হাছানগণিপুর কেরানীয়া, জগতপুর গ্রামে, সিন্দুর ইউপির অলাতলী, নারায়নপুর, কৈখালী, চুন্দার পুর গ্রাম, রাজাপুর ইউপির সাপুয়া, ভবানীপুর, নন্দীরগাঁও, জাঙ্গালীয়া গ্রামে, রামনগর ইউনিয়নের সেকান্দরপুর, আজিজ-ফাজিলপুর গ্রামে, ইয়াকুব পুর ইউপির বরইয়া, চন্ডিপুর, করমুলল্লাপুর ও তালতলী গ্রামে লতিরাজ কচুর চাষ হয়েছে। এছাড়া সোলা কচু, মানকচু, মুখীকচু ও সামান্য চাষ হয়েছে। এবছর দাগনভূঞার প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে লতিরাজ কচু চাষ হয়েছে। লতি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৫০ মেট্টিক টন। কচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৬’শত মেট্টিক টন।
জায়লস্কর ইউপির হীরাপুর গ্রামের কৃষক আবুল কালাম জানান, লতিরাজ কচুর বিশেষ স্বাদ এবং কোন রকম পাশ্ব প্রতিক্রিয়া না থাকায় ক্রেতাদের মাঝে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কচু বিক্রির আগে কচুতে উৎপাদিত লতি বিক্রি করেই উৎপাদন ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব।
লালপুর গ্রামের কৃষক আহছান উল্যা বলেন, বর্তমানে এটি স্থানীয় বাজারে বিক্রি ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়েছে। বিদেশে রপ্তানিযোগ্য এই কচু ও লতি থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।
দাগনভূঞা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, কচু চাষ এই অঞ্চলের কৃষকদের জন্য বোনাস ফসল। কৃষি বিভাগ পতিত নিম্ম জমিতে লতিরাজ কচু আবাদের জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করেছে। এবছর উন্নত কচু চাষাবাদের ট্রেনিং দেয়া হয়েছে। রোপা আমন চাষের আগের সময়টুকুতে জমিতে কোন ফসল থাকে না তখন কচুর চাষ করা হয়। লতিরাজ কচু চাষ করে ইতিমধ্যে অনেক কৃষক তাদের ভাগ্য বদল করতে সমর্থ হয়েছেন।

লোকসংবাদ | Loksangbad | The First Bangla Online Newspaper from Noakhali সাজসজ্জা করেছেন মুকুল | কপিরাইট © ২০২০ | লোকসংবাদ | ব্লগার

Bim থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.