জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রতিকূল পরিবেশে কৃষির উন্নয়নে খাপ খাওয়ানো, পরিবেশ উপযোগী কৃষি প্রযুক্তি, কৃষকের জীবনাচার, কৃষকের সাংস্কৃতি ও লোকজ ঐতিহ্য, চাষাবাদ পদ্ধতিসহ কৃষককের জীবনঘনিষ্ঠ বিষয় সমূহের প্রদর্শনীর মধ্যদিয়ে নোয়াখালীর সুবর্নচরে সমাপ্ত হয়েছে তিন দিনের গ্রামীণ জীবনযাত্রা মেলা। গত মঙ্গলবার মেলার শেষ দিনের বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে ছিল কৃষকের বলি খেলা, গ্রামীণ পিঠা-পুলি উৎসব, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
সুবর্নচর উপজেলা কমপ্লেক্স চত্বরে গ্রামীণ জীবনযাত্রার স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান-সিএসআরএল ও পার্টিসিপেটরি রিচার্স অ্যান্ড এ্যাকশন নেটওয়ার্ক-প্রান’র যৌথ আয়োজনে এই মেলায় চরাঞ্চলের বিভিন্ন পর্যায়ের হাজার হাজার কৃষক কৃষাণির মিলন মেলায় নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময় ও মতবিনিময় সভায় কৃষির সামগ্রিক সংস্কারের দাবি তোলা হয়। একই সাথে উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা, ভূমিহীন কৃষকের জন্য খাস জমি বরাদ্দ, চরাঞ্চলের জন্য স্থায়ী বীজ ভান্ডার ও হিমাগার প্রতিষ্ঠা সর্বপরি কৃষির উন্নয়নে কৃষি জমি রক্ষার জন্য স্থায় কৃষি কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়।
মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি সুবর্নচর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শহীদ সারওয়ার্দীর সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন সুবর্নচর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ খায়রুল আনম সেলিম। বক্তব্য রাখেন কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক (বীজ বিপণন) ড. আনন্দ চন্দ্র দাস, চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কলাম আজাদ, আয়োজক প্রতিষ্ঠান প্রানের নির্বাহী প্রধান নুরুল আলম মাসুদ প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একরামুল করিম চৌধুরী এমপি বলেন, নোয়াখালী জেলার চাহিদা মিটিয়ে এক লাখ টন খাদ্য সারা দেশে সরবরাহ করে থাকে। এজন্য কৃষকের অবদান অনসীকার্য। উৎপাদন বাড়াতে প্রতিবন্ধকতাসমূহ নিরসন করে জেলার কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের জন্য সরকার সবধরণের সহযোগীতা দিবে।
রোববার সকাল সকাল থেকে শুরু হওয়া তিন দিনের এই মেলায় ৩০টি সরকারি-বেসরকারি ষ্টলে চাষাবাদ পদ্ধতি, কৃষি প্রযুক্তি, নতুন উদ্ভাবিত বীজ, বালাই নাশক পদ্ধতি, কৃষির সহায়ক উপকরণ, দূর্যোগপ্রবণ এলাকায় বসতবাড়ি নির্মাণ পদ্ধতি, একটি বাড়ি একটি খামার, ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ পিঠা-পুলি, বিভিন্ন লোকজ সামগ্রী, হস্ত ও কুটির শিল্প সামগ্রী প্রদর্শিত হয়। পাশাপাাশি মেলার মঞ্চে কষৃকের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অভিজ্ঞতা বিনিময়, লাঠি খেলা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা, মোরগ লড়াই, বলি খেলা, যেমন খুশী তেমন সাজো, নাটক, বাউল গান পরিবেশিত হয়।
- আবু নাছের মঞ্জু