নোয়াখালী পৌরসভায় দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা মো. হারুনুর রশিদ আজাদের নাম আনুষ্ঠানিক ঘোষনার অপেক্ষায় রয়েছে।
পৌরসভার স্থগিত ১৪টি কেন্দ্রে গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত ভোটে হারুনুর রশিদ আজাদ (দেয়াল ঘরি প্রতীক) তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী গোলাম মহিউদ্দিন লাতু (আনারস প্রতীক) থেকে ৬ হাজার ৩৯১ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ১৪ কেন্দ্রে হারুন পেয়েছেন ১১ হাজার ৫৬৭ ভোট এবং লাতু পেয়েছেন ৫ হাজার ১৭৫ ভোট।
এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ব্যালট ছিনতাই-নির্বচনী কর্মকতাদের মারধরসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও সহিংসতার অভিযোগে নির্বাচন কমিশন পৌরসভার মোট ২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৭টির ভোটগ্রহণ স্থগিত করে দিয়েছিল। একই সময় বাদবাকি ৮টি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষনা করা হয়েছিল। ওই ৮ কেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফলে হারুনুর রশিদ আজাদ পেয়েছিলেন ২ হাজার ৫৮১ ভোট এবং গোলাম মহিউদ্দিন লাতু পেয়েছিলেন ৪ হাজার ৪৮২ ভোট।
এনিয়ে পরবর্তীতে কমিশনের নিজস্ব এবং বিচার বিভাগীয় তদন্ত হয়। পৃথক দুটি তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে ৬ এপ্রিল ইসি থেকে ৩টি কেন্দ্রের ফলাফলের বৈধতা দিয়ে বদবাকি ১৪ কেন্দ্রে ভোটের তারিখ ঘোষনা দেওয়া হয়। কেন্দ্রগুলো হচ্ছে অরুন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়, নোয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং গোপাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এদিকে স্থগিত ৩ কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষনা চ্যালেঞ্জ করে হারুনুর রশিদ আজাদ হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এরপর হাইকোর্ট থেকে ওই ৩ কেন্দ্রের ফরাফল স্থগিত রাখতে ইসকে নির্দেশ দেওয়া হয়। বিতর্কিত ওই ৩টি কেন্দ্রে হারুন পেয়েছেন ১ হাজার ২২৫ ভোট এবং লাতু পেয়েছেন ৩ হাজার ২৮১ ভোট। এনিয়ে পৌরসভার সবগুলো কেন্দ্রে (২৫ টি) হারুন পেয়েছেন ১৫ হাজার ৩৭৩ ভোট এবং লাতু পেয়েছেন ১২ হাজার ৯৩৮ ভোট।
সবগুলো কেন্দ্র মিয়ে হারুনুর রশিদ আজাদ তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দী গোলাম মহিউদ্দিন লাতু থেকে ২ হাজার ৪৩৫ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন।
জেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক মো. হারুনুর রশিদ আজাদ এরআগে ২০০৪ সালের ১০ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রথম বারের মতো নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। প্রথম মেয়াদেও নির্বাচিত মেয়র হিসেবে তিনি দায়িত্বে রয়েছেন।
এদিকে গতকালের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ন ভোটগ্রহণ নিয়ে সনন্তোষ প্রকাশ করেছেন হারুরনুর রশিদ আজাদ। এক প্রতিক্রিয়ায় পৌরবাসী ও নির্বাচন পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সকলের সহযোগিতা নিয়ে পৌরসভার উন্নয়নে কাজ করে যেতে চাই’। হাইকোর্টে নিজের দায়েরকৃত রিট আবেদন প্রত্যাহারের পর মেয়র হিসেবে তাঁর নাম আনুষ্ঠানিক ঘোষনায় আর কোন বাধা থাকবে না বলে জানান হারুন।
অন্যদিকে হারুরুন রশিদের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট বিএনপি’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা শাখার সভাপতি মো. শাহজাহান বলেন, হারুনের এ বিজয়ের মধ্যদিয়ে এটাই প্রমানিত হলো ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ন নিশ্চিত করা গেলে জনগণের রায় সবসময় বিএনপি’র পক্ষে থাকে’।
- আবু নাছের মঞ্জু