দলীয় কোন্দলের জের ধরে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এড. আবদুর রব চৌধুরী, জেলা পরিষদ প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য একেএম শাহজাহান কামাল, পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য আবু তাহেরসহ ৪৬ জন নেতারা জেলা আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
আজ বুধবার দুপুরে জেলা যুবলীগের তমিজ মার্কেটস্থ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগী কয়েকজন নেতার উপস্থিতিতে এ পদত্যাগের ঘোষণা দেয়া হয়। পদত্যাগপত্রটি বাংলাদেশ আ’লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাবর পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান জেলা আ’লীগ সদস্য পৌর মেয়র আবু তাহের বলেন, বর্তমান বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের নৈরাজ্য প্রতিরোধে বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এমএ আলাউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহিম শক্তিশালী ভূমিকা পালন করছে না। জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি গঠনের তিনি দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল গোফরান, সাংগঠনিক সম্পাদক নুর নবী চৌধুরী, রুহল আমিন মাস্টার, পিপি এডভোকেট জসিম উদ্দিন, এডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন প্রমুখ।
এদিকে, পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষরকৃত জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মহিউদ্দিন বকুল বলেন, আমি কোন পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিনি। আমার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজি ইছমাইল হোসেন খোকন বলেন, আমি যদি পদত্যাগ করতাম তাহলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর করতাম। আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহিম বলেন, দেশের বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি জামায়াত ও বিএনপি জোটকে শক্তিশালী করার লক্ষে একটি সুবিধাভোগী চক্র জেলা আওয়ামী লীগে ফাটল ধরানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। জেলা আওয়ামী লীগের কেউ পদত্যাগ করলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার কথা। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ পদত্যাপত্র গ্রহণযোগ্য নয়।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ এম আলাউদ্দিন জানান, দলের সভানেত্রীর নির্দেশে জেলা কমিটি গঠনের লক্ষ্যে বিভিন্ন ইউনিটের সম্মেলন করা হয়েছে। এখনও কিছু বাকি আছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে সম্মেলনের কাজ সম্পূন্ন করা সম্ভব হয়নি। জেলা কমিটির কয়েকজনের পদত্যাগের কথা শুনেছি। সেটি এখনও আমার হাতে পৌঁছেনি। তিনি আরও বলেন, দল থেকে কয়েকজনকে বহিস্কার করা হয়েছে তারা হয়তো স্বাক্ষর দিয়েছে। তবে তিনি লক্ষ্মীপুর পৌর মেয়র আবু তাহেরের নাম উল্লেখ করে বলেন, তার বাহিনীর লোকেরা গভীর রাতে জেলা কমিটির একাধিক সদস্যের বাড়িতে গিয়ে ঘুম থেকে উঠিয়ে স্বাক্ষর নিয়েছেন। আর যারা পদত্যাগ করেছেন তাদের অনেককে আন্দোলন সংগ্রামে কখনও পাওয়া যায়নি।
- মোঃ রাজীব হোসেন রাজু