আবু নাছের মঞ্জু, নোয়াখালী:
ঢাকা কলেজের মেধাবী ছাত্র অহিদুর রহমান বাবুর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী ৪ নভেম্বর। ২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ চলাকালে ঢাকার শাহাবাগে যাত্রীবাহী বাসে নিক্ষেপ করা পেট্রোল বোমায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে সাতদিন পর ৪ নভেম্বর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে(আইসিইউতে) মারা যান তিনি। এর আগে ২০১১ সালের ১৪ জুলাই নিজ বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন বাবুর পিতা হাজী মো. অজিউল্যা। দুটি ঘটনায় চরম বিপর্যয় নেমে আসে পরিবারটিতে। প্রথম প্রথম নানা সরকারি বেসরকারিভাবে নানা রকম আশ্বাস দিলেও পরে পরিবারটির খোঁজ নেয়নি কেউই।
ওহিদুর রহমান বাবু ২০১৩ সালে ঢাকা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার পিতা হাজী মো. অজিউল্যা ছিলেন ঢাকায় গণপূর্ত বিভাগ সার্ভেয়ার। ১৯৮৯ সালে তিনি চাকুরী থেকে অবসর নিলেও পরে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান। স্বপরিবারে বংশালের নাজিরা বাজার এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। অজিউল্যা সহ ২১ জন মিলে ওয়াক্ফ এস্টেট থেকে বঙ্গবাজারে কিছু সম্পত্তি ইজারা নিয়ে সেখানে ২০০৪ সালে ৩৭০ কক্ষের ঢাকা সুপার মার্কেট নামে একটি বিপনী বিতান করেন। মার্কেটের সভাপতি ছিলেন তিনি। এক পর্যায়ে মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অজিউল্যার সাথে অন্যদের বিরোধ দেখা দেয়। ২০১১ সালের ১৪ জুলাই বিকেলে মোবাইল ফোনে কে বা কারা তাকে ডেনে নেয়। এরপর থেকে সন্ধান মিলছে না তার। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে পরিবারটিতে চরম বিপর্যয় নেমে আসে। নিরুপায় হয়ে পরিবারের অন্য সদস্যরা গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার অভিরামপুরে ফিরে আসলেও নিখোঁর পিতাকে খুঁজে বের করার আশা নিয়ে মাকে নিয়ে ঢাকাতেই থেকে যান ছোট ছেলে ওহিদুর রহমান। কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে খুঁজে বেড়িয়েছেন পিতাকে।
অহিদুর রহমান বাবুর বড় ভাই মুজিবুর রহমান রুবেল বলেন, ‘বাবা থাকতে কথা ছিল ছোট ভাই বাবু অ্যামেরিকা যাবে পড়ালেখা করতে। প্রায় ১২ লাখ টাকাও জমা দেয়া হয়। বাবার মৃত্যুর পর সে টাকাও আর পাওয়া যায়নি। অভাব-অনটন, সন্ত্রাসীদের হুমকি-ধমকি, মামলা-হামলার মধ্যেও বাবু মিডিয়া হাউজে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে বাবাকে খুঁজে বেড়িয়েছে। যখনই কোন হাসপাতালে অজ্ঞাত লাশের খবর পেত তখনই ছুটে যেত সে।
গত বছরের ২৮ নভেম্বর বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের সময় ঢাকার শাহবাগে বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষোপ করে দুর্বৃত্তরা। এতে বাসের ১৯ যাত্রী অগ্নিদগ্ধ হন। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজে বার্ণ ইউনিটের আইসিএউতে সাতদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ৪ নভেম্বর মারা যান কলেজ ছাত্র ওহিদুর রহমান বাবু। সেই সাথে কবর হয় তার সব স্বপ্নের।
পর পর দুটি ঘটনায় পথে বসেছে নিখোঁজ অজিউল্যার পরিবারটি। বাড়ির ঘরটি ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হলেও মেরামতের সামর্থ নেই। বর্ষায় বৃষ্টি ও শীতে কুয়াশা থেকে রক্ষার জন্য চালার টিনের ওপর পলিথিন দিয়ে রাখা হয়েছে। সরকারি চাকুরির অবসর ভাতাটুকুও মিলছে না অজিউল্যার পরিবারের।
বাবুর মৃত্যুর পর সরকারিভাবে পরিবারটিকে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে অভিরামপুরে গ্রামের বাড়িতে দাফন অনুষ্ঠানে এসে স্থানীয় সাংসদ ও জেলা পরিষদের প্রশাসক তার নামে সড়কের নামকরণের প্রতিশ্রুতি দেন গ্রামবাসীকে। কিন্তু সেই সবের কিছুই হয়নি আজো।
বাবুর মা ছালেহা বেগম (৬৫) বলেন, প্রধানমন্ত্রী থেকে ইউপি চেয়ারম্যান, সবাই কত স্বপ্ন দেখিয়েছে। আজ কেউ আসে না। খবরও নেয় না। স্বামী নিখোঁজ, না ফেরার দেশে আমার ছেলে। এক সময় সবই ছিল, ঢাকাতে স্বামী-সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতাম। কখনও অভাব ছুঁতে পারেনি আমাদের। আজ সব হারিয়ে অবশেষে স্বপ্ন হারাতে বসেছি।
ঢাকা কলেজের মেধাবী ছাত্র অহিদুর রহমান বাবুর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী ৪ নভেম্বর। ২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ চলাকালে ঢাকার শাহাবাগে যাত্রীবাহী বাসে নিক্ষেপ করা পেট্রোল বোমায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে সাতদিন পর ৪ নভেম্বর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে(আইসিইউতে) মারা যান তিনি। এর আগে ২০১১ সালের ১৪ জুলাই নিজ বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন বাবুর পিতা হাজী মো. অজিউল্যা। দুটি ঘটনায় চরম বিপর্যয় নেমে আসে পরিবারটিতে। প্রথম প্রথম নানা সরকারি বেসরকারিভাবে নানা রকম আশ্বাস দিলেও পরে পরিবারটির খোঁজ নেয়নি কেউই।
ওহিদুর রহমান বাবু ২০১৩ সালে ঢাকা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার পিতা হাজী মো. অজিউল্যা ছিলেন ঢাকায় গণপূর্ত বিভাগ সার্ভেয়ার। ১৯৮৯ সালে তিনি চাকুরী থেকে অবসর নিলেও পরে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান। স্বপরিবারে বংশালের নাজিরা বাজার এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। অজিউল্যা সহ ২১ জন মিলে ওয়াক্ফ এস্টেট থেকে বঙ্গবাজারে কিছু সম্পত্তি ইজারা নিয়ে সেখানে ২০০৪ সালে ৩৭০ কক্ষের ঢাকা সুপার মার্কেট নামে একটি বিপনী বিতান করেন। মার্কেটের সভাপতি ছিলেন তিনি। এক পর্যায়ে মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অজিউল্যার সাথে অন্যদের বিরোধ দেখা দেয়। ২০১১ সালের ১৪ জুলাই বিকেলে মোবাইল ফোনে কে বা কারা তাকে ডেনে নেয়। এরপর থেকে সন্ধান মিলছে না তার। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে পরিবারটিতে চরম বিপর্যয় নেমে আসে। নিরুপায় হয়ে পরিবারের অন্য সদস্যরা গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার অভিরামপুরে ফিরে আসলেও নিখোঁর পিতাকে খুঁজে বের করার আশা নিয়ে মাকে নিয়ে ঢাকাতেই থেকে যান ছোট ছেলে ওহিদুর রহমান। কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে খুঁজে বেড়িয়েছেন পিতাকে।
অহিদুর রহমান বাবুর বড় ভাই মুজিবুর রহমান রুবেল বলেন, ‘বাবা থাকতে কথা ছিল ছোট ভাই বাবু অ্যামেরিকা যাবে পড়ালেখা করতে। প্রায় ১২ লাখ টাকাও জমা দেয়া হয়। বাবার মৃত্যুর পর সে টাকাও আর পাওয়া যায়নি। অভাব-অনটন, সন্ত্রাসীদের হুমকি-ধমকি, মামলা-হামলার মধ্যেও বাবু মিডিয়া হাউজে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে বাবাকে খুঁজে বেড়িয়েছে। যখনই কোন হাসপাতালে অজ্ঞাত লাশের খবর পেত তখনই ছুটে যেত সে।
গত বছরের ২৮ নভেম্বর বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের সময় ঢাকার শাহবাগে বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষোপ করে দুর্বৃত্তরা। এতে বাসের ১৯ যাত্রী অগ্নিদগ্ধ হন। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজে বার্ণ ইউনিটের আইসিএউতে সাতদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ৪ নভেম্বর মারা যান কলেজ ছাত্র ওহিদুর রহমান বাবু। সেই সাথে কবর হয় তার সব স্বপ্নের।
পর পর দুটি ঘটনায় পথে বসেছে নিখোঁজ অজিউল্যার পরিবারটি। বাড়ির ঘরটি ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হলেও মেরামতের সামর্থ নেই। বর্ষায় বৃষ্টি ও শীতে কুয়াশা থেকে রক্ষার জন্য চালার টিনের ওপর পলিথিন দিয়ে রাখা হয়েছে। সরকারি চাকুরির অবসর ভাতাটুকুও মিলছে না অজিউল্যার পরিবারের।
বাবুর মৃত্যুর পর সরকারিভাবে পরিবারটিকে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে অভিরামপুরে গ্রামের বাড়িতে দাফন অনুষ্ঠানে এসে স্থানীয় সাংসদ ও জেলা পরিষদের প্রশাসক তার নামে সড়কের নামকরণের প্রতিশ্রুতি দেন গ্রামবাসীকে। কিন্তু সেই সবের কিছুই হয়নি আজো।
বাবুর মা ছালেহা বেগম (৬৫) বলেন, প্রধানমন্ত্রী থেকে ইউপি চেয়ারম্যান, সবাই কত স্বপ্ন দেখিয়েছে। আজ কেউ আসে না। খবরও নেয় না। স্বামী নিখোঁজ, না ফেরার দেশে আমার ছেলে। এক সময় সবই ছিল, ঢাকাতে স্বামী-সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতাম। কখনও অভাব ছুঁতে পারেনি আমাদের। আজ সব হারিয়ে অবশেষে স্বপ্ন হারাতে বসেছি।
- আবু নাছের মঞ্জু