সর্বশেষ

নোয়াখালীতে দেড় মাসে জেলেদের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা চাঁদা হাতিয়ে নিয়েছে জলদস্যুরা


লোকসংবাদ প্রতিনিধি:
নোয়াখালীতে সাগর ও নদীতে গত দেড় মাসে জেলেদের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা চাঁদা হাতিয়ে নিয়েছে জলসদস্যুরা। চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় গোপন আস্তানা থেকে জলদস্যু কামাল ওরফে কাউয়া কামালের বাহিনী চাঁদাবাজি ছাড়াও চাঁদাবাজি, ডাকাতি, হত্যা, অপহরণ ও মুক্তিপন আদায় করে আসছে। জেলা পুলিশের অভিযানে চট্টগ্রাম থেকে জলদস্যু কামাল বাহিনীর সাত সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এনিয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। এ সময় পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরীফ জানান, উপকূলীয় এলাকায় থেকে জলদস্যুদেরকে নির্মুলের লক্ষ্যে কিছু দিনের মধ্যে র‌্যাব, পুলিশ ও কোষ্টগান্ডের সমন্বয়ে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে সহকারী পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, দীর্ঘদিন পর্যন্ত জেলার দক্ষিণাঞ্চলে বিচ্ছিন্নভাবে জলদস্যুরা খুন, ঘুম, অপহরণ, নৌডাকাতি ও চাঁদাবাজী করে আসছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর থাকায় গত দুই বছর দস্যুতা কিছুটা কমে আসে। তবে বর্তমানে বিচ্ছিন্ন এসব বাহিনী হাতিয়ার মো. কামাল ওরফে কাউয়া কামালের নেতৃত্বে আবার সংগঠিত হয়ে তাদের অপরাধমূলক কর্মকান্ড শুরু করে।। গত ১০ জুলাই এই বাহিনী সুবর্ণচর উপজেলার চরমজিদের জেলে আলাউদ্দিনকে সাগরে গুলি করে হত্যা করে। এর পর থেকে পুলিশ কাউয়া কামাল বাহিনীকে নির্মুল করতে আরও বেশি সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করে। গোপনে পুলিশসহ দস্যুদের অপকর্মগুলো পর্যবেক্ষণ করে। এসব দস্যুরা চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকায় কয়েকটি বাসা ভাড়া করে সেখান থেকে পরিকল্পনা করে এবং সাগরে ডাকাতি শেষে পুনরায় চট্টগ্রাম চলে যায়। কাউয়া কামাল সাগরে ডাকাতির জন্য তাদের বর্তমান ঠিকানা চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকায় প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে নোয়াখালী জেলা পুলিশ ওই স্থানে গত শুক্রবার বিশেষ অভিযান চালায়। অভিযানে কামউয়া কামালের ৭ দস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তবে কাউয়া কামাল এ সময় পালিয়ে যায়। এ সময় জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের হিসাবের খাতা, সহস্রাধিক টোকেন, বিকাশের কয়েকটি সীমসহ চারটি মোবাইল ফোন সেট জব্ধ করা হয়। জব্দকৃত খাতাগুলোতে সম্প্রতি সময়ে কার কাছ থেকে কতটাকা চাঁদা নেয়া হয়েছে, কোন দস্যু কত টাকা ভাগ নিয়েছে এমন হিসাব রয়েছে। এতে দেখা যায় গত দেড় মাসে সাগরে জেলেদের কাছ থেকে দস্যুরা প্রায় ২০ লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে আরও বলা হয়, এসব দস্যুরা চট্টগ্রামের সন্দ্বিপ, ভোলা, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার বাসিন্দা। বেশিরভাগ সময় তারা ইলিশ মৌসুমে দস্যুতা শুরু করে। গত ২০১৩ সাল থেকে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধ ও সাধারণ মানুষের গণপিটুনীতে প্রায় ১৭ দস্যু নিহত হয়েছে বলেও তথ্য দেওয়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অর্ধশত মামলা রয়েছে। বর্তমান কাউয়া কামাল বাহিনীর মধ্যে প্রায় ৪০ জন সক্রীয় সদস্য রয়েছে।

গত শুক্রবার চট্টগ্রামের গ্রেফতারকৃত দস্যুরা হচ্ছে- ভোলা জেলার বালুর চর গ্রামের আবুল হাশেমের ছেলে নয়ন পাটোয়ারী ওরফে তসলিম (২৯), নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার মদিনা গ্রামের আলা উদ্দিনের ছেলে মো. বাবুল (৩৫), মান্দাখালী গ্রামের মাঈন উদ্দিনের ছেলে মো. শাহয়াজ উদ্দিন (২৫), আদর্শ গ্রামের সাইদুল হকের ছেলে আক্তার হোসেন (২৬), একই গ্রামের সামসুল আলমের ছেলে আলা উদ্দিন (২৬), আল-আমিন গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে শাখাওয়াত হোসেন ওরফে সোহেল (২০) ও দক্ষিণ আজিম নগরের আবুল কালামের ছেলে মো. সেকান্দর (২৬)।

লোকসংবাদ | Loksangbad | The First Bangla Online Newspaper from Noakhali সাজসজ্জা করেছেন মুকুল | কপিরাইট © ২০২০ | লোকসংবাদ | ব্লগার

Bim থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.