লোকসংবাদ প্রতিবেদনঃ
নোয়াখালীতে শনিবার বিকেলে “করোনা প্রতিরোধে আমাদের করণীয়” শীর্ষক অনলাইন সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। নোয়াখালী নাগরিক অধিকার সহায়ক জোট ও এনআরডিএস-এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে সঞ্চালনা করেন এনআরডিএস এর নির্বাহী পরিচালক আবদুল আউয়াল। সভাপতিত্ব করেন অ্যাডভোকেট মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন, আহবায়ক, নোয়াখালী নাগরিক অধিকার সহায়ক জোট।
সেমিনারে উপস্থাপিত নাগরিক প্রতিবেদন বলা হয়, নোয়াখালী জেলায় করোনা সংক্রমণ অতি ঝুঁকিপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং গ্রামাঞ্চলে ব্যাপকতর হয়েছে। সরকারের নানান প্রচেষ্টা সত্ত্বেও জনসমাবেশ স্থল, হাটবাজার ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সমূহে প্রয়োজনীয় শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কোভিড রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রস্তুতির অপ্রতুলতা থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। কোভিড পরীক্ষার অপর্যাপ্ততা ও অব্যবস্থাপনা সহ চিকিৎসা ব্যবস্থায় অপ্রতুল আইসিইউ এবং অক্সিজেন ঘাটতি রয়েছে বলে নাগরিকগণ মত প্রকাশ করেছেন।
ওয়েবিনারে বক্তার বলেন, সংক্রমণ রুখতে নোয়াখালীতে লকডাউন তেমন একটা প্রভাব রাখতে পারছে না। লকডাউনের কারণে কাজ হারানো মানুষের খাদ্য অধিকারসহ জীবন ধারণের অন্যান্য প্রয়োজনীয় অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। করোনা পরীক্ষার নমুনা প্রদানের ব্যবস্থা উপজেলা ভিত্তিক হওয়ায় গ্রামের জনগণের আগ্রহ কম। নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্রে সম্পর্কে বিশেষ প্রচার ও প্রচারণা না থাকায় সঠিক সময় ও স্থান সম্পর্কে জনগণের ধারণা নেই। নোয়াখালীতে টিকা গ্রহণে নারীর অংশগ্রহণের হার ৩৫শতাংশের নীচে। কিন্তু এটা ৫০ শতাংশে উন্নতি করার জন্য সরকারি কোন উদ্যোগ নেই। বর্তমান স্বাস্থ্য জরুরি সময়ে সরকার কমিউনিটি কেন্দ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুললে ইউনিয়নের বিপদাপন্ন মানুষের মাঝে খুব সহজেই করোনার পরীক্ষা ও টিকা ব্যবস্থাপনার সুষ্ঠু বি-কেন্দ্রিকরণ করা সম্ভব হতো।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নারী অধিকার জোটের আহবায়ক লায়লা পারভিন,গণমাধ্যম কর্মী আলমগীর ইউসুফ, ফয়জুল ইসলাম জাহান,নাগরিক ফোরাম সদস্য উম্মে কুলসুম, আবু তাহের, কাজী বেলায়েত হোসেন রাজু।
সভায় মতামত জরিপের মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত নাগরিক প্রতিবেদনে নাগরিকগণ নিম্নোক্ত দাবি তুলে ধরেন-
• সবার জন্য টিকা নিশ্চিতকরণ দরকার, বিশেষভাবে বয়স্ক ও কর্মজীবী মানুষদের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করণ।
• ইউনিয়ন পরিষদ বা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে টিকা রেজিস্ট্রেশন ও প্রদানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
• কমিউনিটি ক্লিনিক সমূহকে মহামারি প্রতিরোধ ও প্রতিকার করার উপযোগী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা।
• সংকট মোকাবিলায় অবিলম্বে কমিউনিটি ক্লিনিক সমূহে সপ্তাহে অন্তত দুই দিন এমবিবিএস ডাক্তার এর ব্যবস্থা করা।
• জরুরি সংকট মোকাবিলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক সমূহে অক্সিজেন সরবরাহ,ওষুধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ।
• ইউনিয়ন পরিষদ সমূহে বিপদাপন্ন মানুষের খাদ্য সহায়তার আবেদন ও অভিযোগ নিরসন ব্যবস্থাপনা চালু করা।
• স্থানীয় পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সেবা সমূহ নিশ্চিত করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরিবীক্ষণ নিশ্চিত করা।
• বিপদাপন্ন ও নিম্নআয়ের ভুক্তভোগী নারী-পুরুষদের জন্য জরুরি খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করা।