।। লোকসংবাদ প্রতিবেদন।।
‘স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে খাদ্য নিরাপত্তা, দারিদ্র্য ও বৈষম্য অবসানের দাবিতে জনসম্মিলন- ২০২২’ চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গ্লোবাল কল টু একশন এগেইনস্ট পোভার্টি (জিক্যাপ) নেটওয়ার্কের আহ্বানে দেশব্যাপী পালিত হওয়া ‘গ্লোবাল উইক অব একশন টু এসডিজিস ইন বাংলাদেশ’ এর সাপ্তাহব্যাপী কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে কারিতাস আঞ্চলিক কার্যালয়, চট্টগ্রামে এসডিজি একশন নেটওয়ার্ক ও এনআরডিএস এর যৌথ উদ্যোগে এ জনসম্মিলন অনুষ্ঠিত হয়। অ্যাডাব এর আঞ্চলিক সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু'র সভাপতিত্বে এবং এনআরডিএস এর নির্বাহী পরিচালক আবদুল আউয়াল এর সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত জনসম্মিলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনআরডিএস এর কমিউনিকেশন অফিসার নুরে আলম সিদ্দিকী।
উন্মুক্ত আলোচনায় স্থানীয় নারী উদ্যোক্তা নীলিমা চাকমা বলেন, আদিবাসি হওয়ায় শিক্ষা লাভের সময় থেকে কর্মজীবনে সকল স্থানেই ভাষা ও খাদ্যাভ্যাস নিয়ে প্রতিনিয়ত অন্য সম্পদায়ের মানুষের নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে। অথচ এসডিজি ১০ বলছে কোন প্রকার বৈষম্য থাকবে না। এই সমস্যা নিরসনে সকল শ্রেণির মানুষের সচেতনতা ও সরকারের কার্যক্রম গ্রহণ করা জরুরি।
অংশগ্রহণকারীরা পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসি সম্পদায়ের সরকারি সেবা ও সহায়তায় পিছিয়ে থাকার কথা তুলে ধরেন ও বলেন যে এসডিজি বাস্তবায়নের অন্যতম প্রতিপাদ্য হলো কাউকে পেছনে ফেলে উন্নয়ন নয়। এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র শ্রেণি, পেশা নির্বিশেষে দেশের সকল মানুষকে সম্পৃক্ত করার বিষয়ে অংশগ্রহণকারীগণ মতপ্রকাশ করেন।
অ্যাডাব এর আঞ্চলিক সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু বক্তব্য রাখছেন |
সম্মেলনে অংশগ্রহনকারীদের বক্তব্যের ভিত্তিতে নিম্নোক্ত দাবি সমূহ উঠে আসেঃ আদিবাসীদের অধিকার ও ভূমি দখল রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা, নারীদের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা ও যথাযথ স্বাস্থ্য সেবার ব্যাবস্থা গ্রহণ এবং কর্মক্ষেত্রে নারী পুরুষ বৈষম্য দূর করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা, উপকূলীয় অঞ্চলে নদী ভাঙ্গণ রোধে স্থানীয় ভাবে স্থায়িত্বশীল ব্যবস্থা গ্রহণ করা, সরকারের সামাজিক সুরক্ষা খাতের আওতা ও হার বৃদ্ধি করা, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের শিক্ষা ক্ষেত্রে সমানাধিকার নিশ্চিত করা, নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পন্যসামগ্রী বাজারজাত করার ক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করা, নারীবান্ধব বাজেট প্রণয়ন করা, স্বাস্থ্যসেবায় সকলের সমঅংশগ্রহণ নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে নিয়মিত চিকিৎসকের ব্যবস্থা রাখা, সেবার মান উন্নয়ন, পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসা উপকরণ ও ঔষধের ব্যবস্থা করাসহ কমিউনিটি ক্লিনিকে রোগীদের সাথে অবৈধ আর্থিক লেনদেন বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষক ও শিক্ষার বৈষ্যম্য দূরীকরণে সারা দেশে অভিন্ন শিক্ষা ব্যবস্থার প্রবর্তন করা এবং নারীর প্রতি সকল সহিংসতা ও নারীবিরোধী সকল প্রচারণা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।
সম্মিলনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অশোক সাহা, সাচিং মারমা, এরশাদুল করিম, রেজাউল করিম, উৎপল বড়ুয়া, দিনবন্ধু ত্রিপুরা, অনুরূপা দেওয়ান, প্রমূখ।