লোকসংবাদ প্রতিবেদন:
অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে নোয়াখালী জেলার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানে দেড়শতাধিক অত্যাধুনিক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এসব সিসি ক্যামেরায় জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরসহ অপরাধীদের দ্রুত পরিচয় সনাক্ত করা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।বুধবার দুপুরে সুধারাম মডেল থানায় স্থাপিত সিসি ক্যামেরা কন্ট্রোল মনিটিরিং সেন্টার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো: আনোয়ার হোসেন বিপিএম(বার), পিপিএম (বার)।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিআইজি মো: আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ও সনাক্তকরণে প্রযুক্তির ব্যবহার কাজে লাগিয়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। একই সাথে তথ্য যাছাই বাছাই করে কাজ করতে হবে। ফেসবুকে গুজবসহ নানান মিথ্যার বিষয়ে সচেতন হতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর আস্থা রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে কিছু দেখলে অনেকেই না বুঝে ঝাঁপিয়ে পড়ে। নানান কথাবার্তা বলে। গুজবে কান দিবেন না, আমাদের প্রতি আস্থা রাখুন। আমরা সত্য বের করে আনবো।’
গত ২২ সেপ্টেম্বর জেলা শহরের লক্ষীনারায়পুর এলাকায় নিজ বাসায় স্কুলছাত্রীকে হত্যা রহস্য উদঘাটন এবং অভিযুক্তকে তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তারে পুলিশ অসাধারণ ভূমিকার কথা রেখেছে উল্লেখ করে ডিআইজি বলেন, ‘এ হত্যাকান্ড সবাইকে হতবাক করে দিয়েছে। একজন শিক্ষক এমন জঘন্য অপরাধ করতে পারে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। পুলিশ দক্ষতার সাথে এ হত্যার রহস্য উদঘাটন করছে এবং আসামি গ্রেপ্তার করেছে। আসামি আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
ডিআইজি আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘গতবছর কুমিল্লার ঘটনায় নোয়াখালীতে যা ঘটেছে তা আমরা কল্পনাও করিনাই। নোয়াখালী প্রাচীন সম্প্রীতির জনপদ। সব ধর্মের মানুষ এ বছর সুন্দরভাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপন করবে এই প্রত্যাশা করি। জেলাজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমূহে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আশা করি অপরাধী সশনাক্তকরণে কার্যকরী পদক্ষেপ হবে। পাশাপাশি সমাজের সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’ আসন্ন দূর্গাপূজায় জেলায় সম্প্রদায়িক সম্পীতি রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
জেলা পুলশ সুপার মো: শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র শহিদ উল্লা খান সোহেল, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম শামছুদ্দিন জেহান।
সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আকরামুল হাসানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক মিলন, কমিউনিটি পুলিশিং জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক কাজী মুহাম্মদ রফিক ঊল্লাহ, সাংবাদিক আবু নাছের মঞ্জু, জেলা আওামী লীগের সদস্য মিথুন ভট্ট, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার শীল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নোয়াখালী পৌর সভার মেয়র শহিদ উল্যাহ খান সোহেল বলেন, ‘পৌর এলাকায় সম্প্রীতি রক্ষায় আমরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি। আগামী দিনে আমরা মাঠে থাকবো। কিশোর গ্যাংসহ অপরাধী দমনে সবাই মিলে কাজ করবো।’
সভাপতির বক্তব্যে জেলা পুলিশ সুপার মো: শহীদুল ইসলাম জানান, সিসি ক্যামেরা কন্ট্রোল মনিটিরিং সেন্টারের মাধ্যমে জেলার সরকারি বেসরকারি স্থাপনা সমূহে স্থাপিত সিসি ক্যামেরাগুলো পর্যবেক্ষণ করা হবে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে নতুন করে স্থাপতি ১৬০টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাধীদেরকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। সুধারাম মডেল থানার পাশাপাশি বেগমগঞ্জ মডেল থানায় এ সিসি ক্যামেরা কন্ট্রোল মনিটিরিং সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে।
এ সময় সদ্য পদোন্নতি পাওয়া পুলিশ সুপার দীপক জ্যোতি খীসা, সুধারাম মডেল থানার ওসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে বেগমগঞ্জের বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শণ করেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো: আনোয়ার হোসেন। এ সময় তিনি সনাতন ধর্মালম্ভীদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।