নোয়াখালীর সেনবাগ-সোনাইমুড়ি সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজে যথাযত প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে নিন্মমানের উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এতে অল্পদিনেই সড়কটি আবার চলাচলে অনুপযোগী হয়ে যেতে পারে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এখনই আশংকা দেখা দিয়েছে। গত ২০০৮ সালের আগষ্ট মাসে এডিবির অর্থায়নে ওই সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। সরেজমিনে সড়কটির কানকিরহাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইট-বালির খোয়া রোলার মেশিন দিয়ে ভালভাবে না বসিয়ে তাঁর ওপরই পাথর দিয়ে কার্পেটিং করা হচ্ছে। ইটবালির খোয়ার ওপর তৈল ও বিটুমিনের আস্তর একদিন আগে দেওয়ার কথা থাকলেও এক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না।
এছাড়া ইটের খোয়াগুলোও অত্যন্ত নিন্মমানের। এসময় খোঁজ করেও প্রকল্প এলাকায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কোন প্রতিনিধি কিংবা দাতাসংস্থা ও সওজের কোন তদারকি কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। কানকিরহাট এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সওজ’র লোক ঠিকমত কাজের তদারকি করতে আসে না। ঠিকাদারের শ্রমিকেরা তাঁদের ইচ্ছামত কাজ করছেন। এসময় নির্মাণের কাজে নিয়োজিত এক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সুপাভাইজার তাঁদের যেভাবে কাজ করতে পরামর্শ দেন, তারা সেভাবেই করেন। এক্ষেত্রে তাঁদের কিছু করার নেই।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নোয়াখালী কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, গত ২০০৮-০৯ অর্থবছরে জেলার সোনাইমুড়ী পুর্ববাজার থেকে কানকিরহাট বাজার পর্যন্ত ১১কিলোমিটার সড়কের নির্মাণকাজের ঠিকাদারী পায় মেসার্স ইউনুছ এন্ড ব্রাদার্স একটি প্রতিষ্ঠান। ওই অর্থবছরের (২০০৮) ১৪ আগষ্ট প্রতিষ্ঠানটিকে সড়কের নির্মাণকাজের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। সুত্র আরো জানায়, কার্যাদেশ অনুযায়ী বারমাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করতে বিলম্ব করে এবং সর্বশেষ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয় গত ১৩ জুন। এরপরও কাজ এখনো শেষ হয়নি। তবে; মাস খানেকের মধ্যে শেষ হতে পারে।
প্রকল্পের কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা এডিবি’র কনসালটেন্ট নাছির আহম্মেদ দাবি করেন, আরো কয়েকটি স্থানের কাজ দেখাশোনা করার কারণে তিনি সারাক্ষন ওই সাইটে থাকতে পারেননা। তিনি থাকাকালে প্রকল্পের নিয়ম অনুসারে কাজ আদায় করে নিয়েছে। এছাড়া রোলার মেশিন দিয়ে ইটের খোয়া না বসানোর কারণে তিনি কিছু অংশের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
ইউছুফ এন্ড ব্রার্দাসের প্রকল্প নির্বাহী মমিনুল হক চৌধুরী বলেন, ওই রাস্তাটির ঠিকাদারী নিয়ে নিয়মানুযায়ী কাজ করতে গিয়ে তাঁর কোম্পানীর প্রায় এককোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। কাজে কোন অনিয়ম করা হয়নি। যথাযত নিয়ম ও প্রক্রিয়া অনুসারণ করেই তাঁরা সড়কটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষ করে এনেছেন।
নোয়াখালী সওজ’র নির্বাহী প্রকৌশলী শ্যামল কান্তি ভট্টাচার্য জানান, ওই প্রকল্পের কাজ তদারকির জন্য এডিবি’র একজন কনসালটেন্ট সার্বক্ষনিক থাকার কথা। এরপরও তিনি ইতিমধ্যে একজন প্রকৌশলীকে সড়কটির নির্মাণে ত্র“টি-বিচ্যুতি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন।
#
- আবু নাছের মঞ্জু