নোয়াখালী পৌরসভা-
নোয়াখালী পৌরসভায় মেয়র পদে চারদলীয় জোট থেকে বর্তমান মেয়র হাররুনুর রশিদ আজাদ, মহজোট থেকে গোলাম মহিউদ্দিন লাতু ও স্বতন্ত্র এ কে এম সাইফুদ্দিন সোহান প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। তবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে মহাজোট ও চারদলীয় জোট প্রার্থীর মধ্যে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মালেক উকিলের ছেলে গোলাম মহিউদ্দিন লাতুকে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন দেয়া হলে প্রথম দিকে নেতাকর্মীরা নিষ্ক্রিয় থাকলেও এখন সবাই একসাথে লাতুর পক্ষে কাজ করছেন।
অন্যদিকে াবএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মোঃ শাহজাহানসহ দলীয় নেতারা জোটপ্রার্থী হারুনের জন্য প্রচারণায় নেমেছেন। ফলে দুই প্রার্থীই এখন মুখোমুখি অবস্থানে।
শেষ পর্যন্ত ফলাফল কার পক্ষে যায় সেজন্য ৫৫ হাজার ২২৯জন ভোটারকে অপেক্ষা করতে হবে ১৮ জানুয়ারি রাত পর্যন্ত। এখানে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫১জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৮জন প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তবে মেয়র নির্বাচনের ধারা কাউন্সিলর নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করবে বলে ভোটারদের ধারনা।
চৌমুহনী পৌরসভা-
চৌমুহনী পৌরসভায় মেয়র পদে মহাজোট থেকে বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ কিরন, চারদলীয় জোট থেকে জুলফিকার আলী ভুট্টো, বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আজিম সুমন, জাতীয় পার্টির থেকে সাবেক পৌর চেয়ারম্যান এবিএম ইউসুফ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসুম রেজা প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। এখানে সরাসরি প্রতিদ্বন্ধীতা হবে মহাজোট ও চারদলীয় জোটের মধ্যে। পাশাপাশি জাপা প্রার্থী ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীও ভালো ভোট পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ৫২জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী ১৫ জন। সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে অন্তত ৫জন বর্তমান কাউন্সিলর পুননির্বাচিত হতে পারেন এমন আভাস সাধারণ ভোটারদের।
সেনবাগ পৌরসভা-
এ পৌরসভার মেয়র পদে ৯ প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে চতুর্মুখী। এখানে আওয়ামীলীগ প্রার্থী আবু জাফর টিপু, বিএনপির ওমর ফারুক বাবুল, বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী ভিপি মফিজুর রহমান, জাতীয় পার্টির তালেবুজ্জামানের মধ্যে লড়াই চলছে সমান তালে।
এখানকার আওয়ামীলীগের সাধারণ নেতাকর্মীরা শংকিত সিনিয়র নেতাদের নিয়ে। কারণ বিগত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের একক প্রার্থীর বিপরীতে বিএনপির তিনজন উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হলেও আওয়ামীলীগ প্রার্থী জিততে পারেনি দলীয় কোন্দলের কারণে। তবে অর্জুনতলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর টিপুর পক্ষে শেষ পর্যন্ত নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে নতুন নজির সৃষ্টি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীর সাথে ভোটের ব্যবধান হবে কম। কারণ বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ এবং বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে রয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মফিজুর রহমান। তাছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থীর রয়েছে ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা। এখানে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫৫জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১১জন প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। ৯ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মধ্যে ভাগাভাগি হতে পারে।
চাটখিল পৌরসভা-
চাটখিল পৌরসভায় মেয়র পদে চার প্রার্থীর মধ্যেই চলছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। আওয়ামীলীগের সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপির গোলাম মোস্তফা, বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুল ইসলাম ভূঞা এবং জাতীয় পার্টির ফজলুল করিম বাচ্চু অবস্থান করছেন মুখোমুখি। শেষ পর্যন্ত চারদলীয় জোট এবং মহাজোটের বাইরে গিয়ে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী চমক দেখিয়ে দিতে পারেন; এমন খবরও উড়ছে ভোটের আকাশে। এখানে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৩জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১১জন প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। সাধারণ কাউন্সিলরদের মধ্যে বিএনপি এবং বর্তমান কাউন্সিলরদের বেশী বিজয়ী হতে পারেন বলে জানা গেছে।
হাতিয়া পৌরসভা-
হাতিয়ায় ৬ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামীলীগের এডভোকেট ছাইফ উদ্দিন আহম্মেদ, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এ কে এম ইউসুফ আলী, বিএনপির এডভোকেট সাজ্জাদ হোসেনের প্রতিদ্বন্ধিতা চলছে। তবে শেষ পর্যন্ত লড়াই হবে আওয়ামীলীগ প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে। স্থানীয় সাংসদ প্রকৌশলী ফজলুল আজিমও তাঁকে সমর্থন দিয়েছেন। অপরদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করতে সিদ্ধহস্ত সাবেক সাংসদ ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও তাঁর স্ত্রী গত সংসদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আয়েশা আলী আদাজল খেয়ে নেমেছেন। এনিয়ে মোহাম্মদ আলীকে শোকজ করেছে জেলা আওয়ামীলীগ। এখানে সাধারন কাউন্সিলর পদে ৫০জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৯জন প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। মেয়র পদে যিনি বিজয়ী হবে তাঁর অনুসারী কাউন্সিলর বেশী নির্বাচিত হবে বলে সাধারণ ভোটারদের ধারণা।
কবিরহাট-
এ পৌরসভায় মেয়র পদে সরাসরি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছে চারদলীয় জোট প্রার্থী ফখরুল ইসলাম দুলাল ও মহাজোট প্রার্থী জহিরুল হক রায়হান। এখানে মেয়র প্রার্থী এদুজনই। চারদলীয় জোট প্রার্থীর প্রতি রয়েছে সাবেক পৌরসভা চেয়ারম্যান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিষ্টার মওদুদ আহমদের সমর্থন। শেষ পর্যন্ত যিনিই নির্বাচিত হন ভোটের ব্যবধান কম হবে বলে শোনা যাচ্ছে। এখানে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩০জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৯জন প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। তবে এই পৌরসভায়ও মেয়র পদে বিজয়ের সাথে রয়েছে কাউন্সিলরদের বিজয়ের সম্পর্ক। পাশাপাশি বর্তমান কাউন্সিলররা ভালো করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বসুরহাট-
বসুরহাট পৌরসভায়ও নির্বাচন হচ্ছে সরাসরি চারদলীয় জোট ও মহাজোটের মধ্যে। মহাজোট প্রার্থী সাবেক পৌর চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সাংসদ ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই মীর্জা কাদের এবং চারদলীয় জোট প্রাথী ও বর্তমান মেয়র কামাল উদ্দিন চৌধুরীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। এখানে মেয়র প্রার্থী এদুজনই। নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের শংকা দুর করতে নির্বাচন কমিশন এখানে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে শেষ পর্যন্ত অল্প ভোটের ব্যবধানে হারতে হবে দুজনের যে কোন একজনকে। এখানে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৯জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ৮জন। সাধারণ কাউন্সিলরদের মধ্যে বর্তমান কাউন্সিলরদের বেশীরভাগই পুননির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- আবু নাছের মঞ্জু