অবশেষে নোয়াখালী জিলা স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বহুদিনের প্রতিক্ষার অবসান হলো। ভাষা আন্দোলনের দীর্ঘ ৫৯ বছর পর স্কুল ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠা করা হলো একটি শহীদ মিনার। স্কুলের প্রশাসনিক ভবনের সামনে নির্মিত বিশাল এই শহীদ মিনারটি সোমবার একুশে ফেব্র“য়ারিতে উন্মুক্ত করা হলো।
আর এই মহতী কাজটি সম্পন্ন হয়েছে স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র এবং বর্তমানে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন শাহীনের ব্যক্তিগত অর্থসহ সার্বিক তত্ত্বাবধানে। একুশের প্রভাত ফেরির পর আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি নিজেই ফলকউন্মোচন ও পুস্পার্ঘ অপর্ণের মধ্যদিয়ে শহীদ মিনারটির উদ্বোধন করলেন।
জেলা শহর মাইজদীর প্রানকেন্দ্র জিলা স্কুলের মাঠে শহীদ মিনার নির্মাণের খবরে মুহুর্তের হাজারো মানুষের পুস্পার্ঘে ভরে ওঠে নবনির্মিত শহীদ মিনারের বেদী। এসময় স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, স্কাউট্স দল এবং প্রাক্তন ছাত্ররা পুস্পার্ঘ অর্পণের সাথে সাথে মাথা নিচু করে ভাষা শহীদদের প্রতি বিনর্মর শ্রদ্ধা জানান।
এসময় সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় শিহাব উদ্দিন শাহীন বলেন, ৫২’র ভাষা আন্দোলনের মধ্যদিয়ে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের ভীত রচিত হয়েছিল। কিন্তু ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরনে জেলার প্রধান এই বিদ্যাপীঠটিতে শহীদ মিনার নির্মিত না হওয়ায় বিষয়টি প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে তাঁকেও পিড়া দিত। তাই তিনি ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধ থেকে নিজেই শহীদ মিনারটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোস্তফা জামান, জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাম মোহন সেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক আবদুল মতিন, প্রাক্তন ছাত্র নুর উদ্দিন জিহাদী, বর্তমান ছাত্র ওছমান গনি ও এ এস এম নাছিম।
নোয়াখালী জিলা স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৮৫০ সালে। এর ১০২ বছর পর বাংলা প্রতিষ্ঠা পায় আমাদের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে। ভাষা আন্দেলনের পর দীর্ঘ সময় চলে গেলেও জেলা শহরের এই বিদ্যপীঠটিতে নির্মিত হয়নি কোন শহীদ মিনার। কোন সরকারের আমলেই কেউ এর প্রয়োজনবোধ করেননি। এনিয়ে স্কুলটির প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের আক্ষেপেরও কমতি ছিল না।
- আবু নাছের মঞ্জু