সর্বশেষ

বীজ কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, চাষীদের ক্ষতিপূরণ দেয়া, ব্যাংক ঋণ মওকুফ সহ ১০ দফা দাবি নোয়াখালী প্রেসক্লাব চত্বরে ঝলক চাষীদের সংবাদ সম্মেলন


নোয়াখালীতে ঝলক ধান চাষীরা এবার নষ্ট ফসল নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করলেন। নোয়াখালীর ক্ষতিগ্রস্ত ঝলক চাষী ব্যানারে শুক্রবার বেলা ১১টায় নোয়াখালী প্রেসক্লাব চত্বরে এই সংবাদ সম্মেলনে বীজ কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, চাষীদের ক্ষতিপূরণ দেয়া, ব্যাংক ঋণ মওকুফ সহ ১০ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।


দাবিগুলো হচ্ছে: ১.ঝলক ধানের বীজ আমদানিকারক কোম্পানি এনার্জি প্যাক এগ্রো লিমিটেডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা, ২.ক্ষতিগ্রস্ত সকল কৃষকের নাম তালিকাভুক্ত করা এবং তা প্রকাশ করা, ৩. অবিলম্বে নোয়াখালীকে কৃষি উপদ্রুত এলাকা ঘোষণা করা, ৪. ফলন বিপর্যয়ের শিকার ঝলক চাষীদের চাল, ডাল, আটা সহ খাদ্য সহায়তা দেওয়া, ৫. জেলা সার- বীজ মনিটরিং কমিটির কাজে স্ব”চ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, ৬. মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কৃষি কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করা, ৭. অবিলম্বে বীজ কোম্পানি থেকে কৃষকদের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় করা, ৮. ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ব্যাংক ঋণ এবং এনজিও ঋণ মওকুফ করা, ৯. বীজ বিক্রির সময় রশিদ দেওয়া বাধ্যতামূলক করা, ১০.কোয়ারেন্টাইন ও বিএডিসি’র জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, ১০. ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাদিনগরের কৃষক মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন চৌধুরী জানান, চলতি বোরো মওসুমে নোয়াখালীর অন্তত ১০ হাজার কৃষক হাইব্রিড ধান ঝলক চাষ করে ফলন বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে। কৃষকের চোখের সামনেই নষ্ট হয়ে গেছে প্রায় ২৩ কোটি টাকার ফসল। তিনি বলেন, ‘কৃষক পরিবারগুলো যখন সোনালি ফসল ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা; আমরা ঝলক চাষীরা তখন ফসল হারিয়ে চোখেমুখে অন্ধকার দেখছি। ঘরের অন্নের যোগান, মহাজনের সুদের টাকা ও ব্যাংক লোন পরিষোধ এসবের কোন কিছুরই উপায় খুঁজে পাচ্ছিনা আমরা। ’

নোয়াখালীতে সরকারি হিসাবে ১ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধান ঝলক আবাদ করা হয়। এরমধ্যে ১ হাজার ১৩৭ হেক্টর জমির ফসল পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। সংবাদ সম্মেলনে কৃষকরা অভিযোগ করেন, কৃষি বিভাগ থেকে ৬ হাজার ৭৯২ জন ক্ষতিগ্রস্ত ঝলক চাষীর তালিকা তৈরি করা হলেও তা বাস্তবসম্মত নয়।

কৃষকরা বলেন, ‘সরকারি তালিকায় কাদের নাম আছে বা নেই তা আমরা জানিনা। এমনকি কৃষকদের আদৌ কোন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে কিনা তা নিশ্চিত করছেনা কৃষি বিভাগ। আমরা শুনতে পাচ্ছি ঝলকের ফলন বিপর্যয় নিয়ে সরকারিভাবে কয়েকটি তদন্ত দল কাজ করছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন তদন্ত দল মাঠ পর্যায়ে আমাদের বক্তব্য নিতে আসেনি। তাহলে প্রশ্ন, তদন্ত দল কাদের সাথে কথা বলছেন, কোন এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করছেন। এক্ষেত্রে আমরা ষ্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিতে চাই যে, ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় না এসে, কৃষকদের বক্তব্য না নিয়ে দায়সারা অথবা কোন বিশেষ মহলের স্বার্থ রক্ষায় দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন কৃষকরা কোনভাবেই মেনে নেবেনা।’

সংবাদ সম্মেলনে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা প্রতারক বীজ কোম্পনি বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ; গণশুনানীর আয়োজন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঘেরাও, কৃষক জমায়েত, ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লেখাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সদর উপজেলার ধন্যপুর গ্রামের কৃষক মুক্তিযোদ্ধা এনায়েত মেম্বার, কৃষক নেতা আনোয়ার হোসেন, বেগমগঞ্জের শরীফপুর ইউনিয়নের কামাল উদ্দিন, আজগর আলী, হাসানপুরের জহির উদ্দিন ভূঞা, বাহার উদ্দিন চৌধুরী ও শিমুল হাসান ভূঞা।

প্রসঙ্গত: নোয়াখালীর ক্ষতিগ্রস্ত ঝলক চাষীরা গত ২৪ এপ্রিল নোয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে নষ্ট হয়ে যাওয়া ফসলে অগ্নি সংযোগ করে এবং পরে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি পেশ করেন।

লোকসংবাদ | Loksangbad | The First Bangla Online Newspaper from Noakhali সাজসজ্জা করেছেন মুকুল | কপিরাইট © ২০২০ | লোকসংবাদ | ব্লগার

Bim থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.