সহকর্মীর লাঞ্ছনাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে ফের রাস্তায় দাঁড়ালেন নোয়াখালীতে কর্মরত সাংবাদিকরা। একই সঙ্গে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় না আনায় ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা। এ ঘটনার প্রতিবাদে রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নোয়াখালী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সামনে ব্যানার হাতে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করে তারা দুই ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন ও সমাবেশ করে।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে একাত্তর টিভির নোয়াখালী প্রতিনিধি মিজানুর রহমান পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাদের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার ৪ দিন পার হয়ে গেলেও আসামি গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি সুমন ভৌমিকের সঞ্চালনায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বখতিয়ার শিকদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক আনোয়ার, জামাল হোসেন বিষাদ, মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার নাসির উদ্দিন বাদল, মানবকণ্ঠের প্রতিনিধি লিয়াকত আলী খান, ইনডিপেনডেন্ট প্রতিনিধি আবু নাছের মঞ্জু, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহবুবুর রহমান, এনটিভির স্টাফ রিপোর্টার মাসুদ পারভেজ, ডেইলি সানের প্রতিনিধি আকাশ মো. জসিম প্রমূখ।
বক্তারা অভিযোগ করেন, গত বুধবার দুপুরে জেলার বেগমগঞ্জের বাংলা বাজারে বিএনপির একটি কর্মসূচির সংবাদ সংগ্রহকালে স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা মিজানুর রহমানের ওপর হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা মিজানের মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে তার ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও ও ছবি মুছে ফেলে। ছিনিয়ে নেয়ার ২ ঘন্টা পর মোবাইল ফোন ফিরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় মিজানুর রহমান বাদী হয়ে গোপালপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক জাবেদ হোসেন রকি ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি তুহিনের বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও তাদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর আগে ঘটনার দ্বিতীয় দিনে মানববন্ধনে বক্তারা প্রশাসনকে আগামি ৪৮ ঘন্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের সময়সীমা বেধে দিয়ে তা না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। কিন্ত হামলাকারীরা প্রকাশ্যে মিছিল সমাবেশ করলেও আইশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।
এসময় বক্তাগণ পুলিশকে আরো ২৪ ঘন্টা সময় বেধে দেন। এর মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা না হলে পুলিশ প্রশাসনের সকল সংবাদ বয়কট করাসহ আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। একই সঙ্গে মদদদাতা আ. লীগের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবী জানানো হয়।
বেগমগঞ্জ মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি জানান, মাননীয় পুলিশ সুপারের নির্দেশে ডিবি পুলিশ ও আমরা যৌথভাবে অভিযান করছি। আমরা চেষ্টা করছি দু’একদিনের মধ্যে একটা রেজাল্ট পাওয়া যাবে।
প্রসঙ্গত, বেগমগঞ্জের বাংলাবাজারে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্যাহ বুলুর উপস্থিতিতে দলটির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপ্রতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে খাবার বিতরণ কর্মসূচির খবর সংগ্রহ করতে যান। এ সময় স্থানীয় যুবলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে কর্মসূচিস্থলে এসে হামলা চালায়। এসময় ভিডিও ধারন করতে গেলে যুবলীগ কর্মী জাবেদ হোসেন রকি ও তুহিন মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করে। দুই ঘন্টা পর সকল ভিডিও মুছে তাকে মোবাইল ফেরত দেওয়া হয়। এ ঘটনায় বুধবার রাতেই বেগমগঞ্জ মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন মিজানুর রহমান।