মতামত
আমাদের শহর ও দানবে হানা এবং একটি উন্নত হাসপাতালের আবেদন
হা বী ব ই ম ন
আমাদের প্রিয় শহর মাইজদী। জন্ম শহর মাইজদী। যে শহরটিকে জীবনের এতোটা বছর চিনে আসছিলাম, বড় আপন মনে করতাম, সেই শহরটিকে আজ বড্ড ধূসর মনে হয়। বড় অচেনা মনে হয়। বড় বেমানান একটা জেলা শহর মাইজদী। কোলাহলপূর্ণ একটি শহরটা আজ বিষময় হয়ে উঠেছে।
মতামত
করোনাভাইরাস: লক্ষণ, চিকিৎসা ও সুরক্ষার উপায় কী
লোকসংবাদ ডেস্কঃকরোনাভাইরাস, যার পোশাকি নাম কোভিড-১৯, সেই রোগটিকে এখন বিশ্ব মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই ভাইরাস যা মানুষের ফুসফুসের মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করে- যা পূর্বে বিজ্ঞানীদের অজানা ছিল- চীন থেকে এখন ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে।
ছে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে।
হাতিয়ার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন
শাহেদুল ইসলাম, হাতিয়া থেকে :
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ম্যানগ্রোভ বনায়ন প্রকল্পের ৬ হাজার ৬ ‘শ ৮০ একর জমির সকল গাছফালা গত দু’ মাস ধরে নির্বিচারে কেটে নিয়ে যাচ্ছে বনদস্যুরা চরাঞ্চল এখন যেন পরিনত হয়েছে মৃত্যু কুপে।সরকার দলীয় কথিত গড়ফাদারদের নির্দেশে বনদস্যুসর্দার মুন্সিয়া বাহিনীর সদস্যরা এসব কর্মকান্ড করছে বলেও অনেকে অভিযোগ করেন। গত ২ মাস থেকে এ বন কাটার মহোৎসব শুরু হলেও গত সপ্তাহ থেকে তা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
১৫ অক্টোবর এবং ৩ নভেম্বর বনবিভাগের বীট কর্মকর্তাদের বহু আবেদন মামলা ও জিডির প্রেক্ষিতে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানা পুলিশ ও কোস্টগার্ড উক্ত বনাঞ্চলে দস্যু মুন্সিয়া চোরার বাহিনীদের গ্রেফতারের জন্য এক সাঁড়াশি অভিয়ান চালিয়ে দস্যু বাহিনীর তৈরী করা তিনটি আস্তানা গুটিয়ে দেয়। এসময় তারা ব্যাপক নিধন করা গছ উদ্ধার করলেও ঘটনার মূল হোতাদের রহস্যজনক ভাবে গ্রেফতার করছেনা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মুন্সিয়া চোরার নিজ এলাকার শত শত লোকজন জানান, দস্যু মুন্সিয়া প্রায় তার নিজ বাড়িতে থাকেন। প্রকাশ্যে চরচেঙ্গা বাজারে পুলিশের সামনে গুরাফেরা করলেও পুলিশ তাকে প্রেফতার করছেনা। অথচ পুলিশ বলছে তাকে খুঁজে পায়না। হাতিয়া থানা ওসি ও স্বীকার করেছেন তারা অভিযান চালানোর জন্য থানায় প্রস্তুতি নিলে পূর্বক্ষণে খবর পেয়ে যায় তার বাহিনীরা।
জানা যায়, গত কয়েক দিন পূর্বে সেখানে সবুজ গাঢ় বন ছিল, বেষ্টনি ছিল। বন কর্মকর্তারা জানান, প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে নোয়াখালীর হাতিয়াসহ উপকূলের মানুষের জানমাল রক্ষার ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হতো এসব বনাঞ্চল, সেখানে এখন বনদস্যুদের নির্বিচারে সবুজ বেষ্টনির বৃক্ষ নিধনের ফলে এখানে বন ও গাছপালাহীন ন্যাড়া এক জনপদ যেন ভেংচি কাটছে মুখ ব্যাদাম করে। দিনদিন বন উজাড় করে বন কর্মকর্তা ও বনদস্যুদের থেকে জমি কিনে হাতিয়ার মেঘনার পাড়ে ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় এই সংরক্ষিত বনবিভাগে এখন ৪০ হাজার ভুমিহীন বসবাস করে। বিশাল জনপদ ও সবুজ বেষ্টনি নিধনের ফলে দ্বীপের চরাঞ্চলের হরিণগুলো বন ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসে এবং তাদের কুকুর ও অন্যান্য প্রাণিরা খেয়ে ফেলে।
বিশেজ্ঞরা মনে করেন, হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ, কালামচর, দমারচর, ইসলামচর, ডালচর, জাগলারচন, বয়ারচর, ক্যারিংচর, নলেরচর ও ঠেঙ্গারচরসহ হাতিয়া দ্বীপে বসবাসকারী প্রায় ৬ লাখ মানুষ এখন প্রাকৃতিক দূর্যোগের বয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে জলবয়ু পরিবর্তণ এবং ঘন ঘন ঘুর্ণিঝড় ও বৃক্ষ নিধনের ফলে হাতিয়া দ্বীপ এখন পরিণত হয়েছে মৃত্যু কুপে। বিপদাপন্ন মানুষ গুলো ও বনাঞ্চল রক্ষার জন্য প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেনা।
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালীর হাতিয়া উপকূলের ৬ লাখ মানুষকে সামুদ্রিক ঝড়-জলচ্ছ্বাস জলবায়ুর চ্যালেন্স মোকাবেলায়, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং উন্নয়নের লক্ষে উপকূলীয় নদী গুলোর মহনায় ১ লাখ ৭৫ হাজার একর ভূমিতে ১৯৬৭-৬৮ অর্থ বছর থেকে ম্যান গ্রোভ বনায়ন শুরু হয়। বিভিন্ন সময়ে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে , ৭০ হাজার একরেরও বেশি বনভূমি নষ্ট হয়ে যায়। সর্বশেষ নিঝুমদ্বীপসহ হাতিয়া উপকূলের বনভূমিকে সংরক্ষণের জন্য সরকার একে ২০০১ সালে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করলেও বনদস্যুদের নির্মমতার কারণে সেটিও প্রায় ধ্বংসের পথে। নিঝুমদ্বীপ, কালামচরসহ চরাঞ্চলে ঘুরে দেখা যায় বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলের ধ্বংসাবশেষের চিত্র।
কারামচরে গরু, মহিষ, ছাগল চরানো রাখালদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, গত সপ্তাহ থেকে দস্যু মন্সিয়া চোরার বাহিনীরা উক্ত চরের হাজার হাজার গাছ কেটে কথিত ভূমিহীনদেরকে ৩-৫ হাজার টাকা চাঁদা নিয়ে জমি বন্ধবস্ত দিবে বলে তাদেরকে বসতি তৈরী করার জন্য নির্দেষ দেয়।
স্থানীয় এক বাসিন্দা নাম না প্রকাশ করার শর্তে লোকসংবাদকে জানান, প্রায় দু’ সপ্তা পূর্বে বনদস্যুরা স্থানীয় সরকার দলীয় নেতাদের ছত্রছায়ায় সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে হাতিয়ার কালাম চরের সরকারী ম্যানগ্রোভ বনায়ন প্রকল্পের হাজার হাজার গাছ নিধন করে সেখানে তৈরী করেছে বনাঞ্চলের ধবংস স্তুপ।
হাতিয়া কোস্টগার্ড কন্টিনজেন্ট কমান্ডার খন্দকার জাকির হোসেন বলেন, বনবিভাগ ও প্রশাসনের উদাসীনতার ও দূর্বলতার সুযোগে সন্ত্রাসীরা এমন কর্মকান্ড পরিচালনা করেছে।
হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রতন দাস গুপ্ত লোকসংবাদকে বলেন, সন্ত্রাসী গডফাদার সকলকে আমাদের গ্রেফতার করার জন্য অব্যাহত প্রচেষ্টা চলছে।
এ ব্যাপারে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদের সাথে আলাপ করলে তিনি লোকসংবাদকে জানান, বিষয়টি খুবই ভয়াবহ। আমরা উপকূলীয় বনাঞ্চল রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
সাম্প্রতিক
বৃহত্তর নোয়াখালীর তথ্যনির্ভর অনলাইন পত্রিকা লোকসংবাদ পড়ুন। লোকসংবাদে বিজ্ঞাপন দিন।
রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধূলা, ভ্রমণকাহিনী, গল্প, কবিতা, তথ্যপ্রযুক্তি, সমস্যা, সম্ভাবনা, দৃষ্টি নন্দন ছবি, ভিডিওচিত্র কিংবা বৃহত্তর নোয়াখালীর যে কোন বিষয়ে আপনার মতামত, প্রবন্ধ, নিবন্ধ লোকসংবাদ পাঠকদের জন্য পাঠিয়ে দিন news@loksangbad.com ঠিকানায়।