সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য জানায়, বহুজাতিক কোম্পানি কেয়ার্ন এনার্জি করপরেশন (বাংলাদেশ) প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের পর কুপটিতে গ্যাস মজুদ রয়েছে বলে পেট্রোবাংলাকে রিপোর্ট দাখিল করে। ঐ রিপোর্টের প্রেক্ষিতে ২০০৭ সালের অক্টোবর মাসে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) এর পরিচালনা পর্ষদ প্রকল্পটি খননের উদ্যোগ নেয়।
২০০৭ সালের নভেম্বর মাসে বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং ২০০৮ সালের ফেব্র“য়ারিতে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক প্রকল্পটি অনুমোদনের পর ২০০৮ সালের জুন মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) এর অনুমোদন করে। তখন প্রকল্পের মেয়াদ নির্ধারন করা হয়েছিল ২০০৮ সালের জুলাই থেকে ২০১০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৩০ মাস। প্রকল্পের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এর ২৫.৬ শতাংশ অর্থাৎ ১৮ কোটি ৮৮ লাখ ১০ হাজার টাকা স্থানীয় মুদ্রায় এবং ৭৪.৩৬ শতাংশ অর্থাৎ ৫৪ কোটি ৭৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার সমপরিমান বৈদেশিক মুদ্রায়। প্রকল্পের আওতায় কেয়ার্ন কর্তৃক চিহ্নিত এলাকায় ২ ডি সাইসমিক সার্ভে পরিচালনার মাধ্যমে আহরিত উপাত্ত ও নমুনা বিশ্লেষণ করে কূপ খননের স্থান চিহ্নিত করার পর প্রায় ৩ হাজার ৫০০ মিটার (সাড়ে তিন কিলোমিটার) গভীর অনুসন্ধান কূপ খনন এবং কূপ পরীক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।
কার্যক্রম সম্পন্ন হলে এ খনি থেকে গ্যাস উত্তোলন বাণিজ্যিক লাভজনক হবে কিনা তা চুড়ান্তভাবে নিশ্চিত হওয়া যাবে। প্রাথমিক তথ্য অনুসারে কারিগরি ও বাণিজ্যিকভাবে গ্যাস উত্তোলন লাভজনক বিবেচিত হলে উৎপাদন কূপ খনন এবং গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ প্লান্ট স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। ২০০৮ সালের জুলাই থেকে ২ডি সাইসমিক সার্ভে শুরু করা হয় এবং ইতোমধ্যে এ সার্ভে কার্যক্রম শেষে হয়। সার্ভেতে প্রাপ্ত উপাত্ত ও নমুনা বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে গত ২২ জুলাই বাপেক্সের কারিগরি দল সাড়ে তিন কিলোমিটার গভীর অনুসন্ধান কূপ খননের স্থান চিহ্নিত করেছে। স্থান চিহ্নিতকরণের পর সংশ্লিষ্ট এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম এবং কূপ খননের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ-যন্ত্রপাতি সংগ্রহের কার্যক্রম করা হয়।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে কূপ খনন স্থানে যাতায়াতের জন্য সড়ক নির্মাণ ও খনন যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ এবং কূপ খননের শুরু করা হবে। পরবর্তী পর্যায়ে গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ প্লান্ট স্থাপন এবং জাতীয় গ্রীডে গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যে পাইপ লাইন স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। প্লান্ট ও পাইপ লাইন স্থাপনে আরও অতিরিক্ত প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রকল্পটি সফলভাবে সমাপ্ত হলে আগামী ২০১১ সালের শেষ নাগাদ জাতীয় গ্রীডে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে। নোয়াখালীসহ দেশের শিল্প ও বাণিজ্যিক বিকাশে এ গ্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি দেশের প্রধান শিল্প ও বাণিজ্যিক অঞ্চল চট্টগ্রামের বিরাজমান তীব্র গ্যাস সঙ্কট নিরসনে সহায়তা করবে।
এদিকে আজ শুক্রবার সকালে তথ্য মন্ত্রনায়ল সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের সুন্দলপুর তেল গ্যাস কুপ খনন প্রকল্পটি পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বলেন, সুন্দলপুর তেল গ্যাস কুপ খনন প্রকল্প সফল হলে জাতীয় গ্রীডে জ্বালানী ও বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তিনি কুপ খনন কাজে সরকারের সর্ব মহল এবং স্থানীয় প্রশাসন ও সর্বদলীয় রাজনৈতিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। এ সময় বাপেক্স‘র ম্যানেজিং ডিরেক্টর মর্তুজা আহমদ,
প্রকল্পের পরিচালক আবদল হালিম, জেলা প্রশাসক সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন, সিরাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু ছায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
- আবু নাছের মঞ্জু